চা–শ্রমিকদের তালিকায় সচ্ছল কর্মচারীদের নাম

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দুস্থ চা–শ্রমিকদের ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের বদলে সচ্ছল কর্মচারীদের মধ্যে টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

অসচ্ছল চা–শ্রমিকদের প্রতিবছর ৫ হাজার টাকা করে দেয় সরকার। এই টাকা দেওয়ার জন্য করা হয় তালিকা। কিন্তু ওই তালিকায় অসচ্ছল চা–শ্রমিকদের বদলে সচ্ছল কর্মচারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সম্প্রতি চেকও বিতরণ করা হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায়।

এ ঘটনায় বঞ্চিত চা–শ্রমিকেরা কমলগঞ্জের ইউএনওর কাছে গত রোববার লিখিত অভিযোগ করেন। ওই দিনই এ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ২৭টি চেক জব্দ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রাথমিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অবহেলিত ও অনগ্রসর চা–শ্রমিক জনগোষ্ঠীর পারিবারিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় ‘চা–শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম’ গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর সরকার চা–শ্রমিকদের মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়। ৭ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা–বাগান ও এর ফাঁড়ি সুনছড়া, কামারছড়া চা–বাগানের ১ হাজার ৩৫৬ জন শ্রমিকের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ওই তালিকায় চা–বাগানের ২৭ জন সচ্ছল কর্মচারীর নাম ছিল। ওই তালিকার ২৭৯ নম্বরে আলীনগর চা–বাগানের প্রধান টিলা ক্লার্ক নিয়ামুল হোসেন চকদার, ২৮০ নম্বরে গুদাম বাবু সিরাজুল ইসলাম, ২৮১ নম্বরে টিলা ক্লার্ক বাবুরাম কৈরী, ২৮২ নম্বরে সুনছড়া চা–বাগানের টিলা ক্লার্ক গোপাল চক্রবর্তীসহ চা–বাগানের কম্পিউটার ও কারখানার কর্মচারীদের নাম ছিল। তালিকায় চা–বাগানের সচ্ছল কর্মচারীদের তালিকা দেখে চা–শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চা–শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার তালিকা পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিধিরা যৌথভাবে করলেও তাঁরা একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।