চিম্বুক পাহাড়ে সংসদীয় তদন্ত দল

চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের নামে ম্রো আবাসভূমি বেদখলের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে চিম্বুক পাহাড় ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন ও আদিবাসী ফোরাম সংহতি সমাবেশ করে।
ফাইল ছবি, প্রথম আলো

বান্দরবানের চিম্বুকের নাইটং পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি দল। গতকাল শনিবার তিন সদস্যের সংসদীয় দল ম্রোদের জমি দখলের অভিযোগ তদন্ত করতে আসে। এ সময় তাঁরা সেনা কর্মকর্তা, স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা পরিষদের সদস্য ও ম্রো জনগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বেলা ১১টায় রাঙামাটির সাংসদ দীপঙ্কর তালুকদারের নেতৃত্বে সংসদীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা নাইটং পাহাড়ে যান। অন্য দুই সদস্য হলেন খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও সাতক্ষীরা-২ আসনের সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব লতিফা বেগম।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন, জেলা পরিষদ থেকে ইজারা নেওয়া ২০ একর জমির ওপর সিকদার গ্রুপ ও সেনাকল্যাণ ট্রাস্ট যৌথভাবে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। ওই জায়গার আড়াই কিলোমিটারের আশপাশে কোনো পাড়া বা জনবসতি নেই। ইজারা নেওয়া জমির বাইরে তাঁরা যাবেন না। এ জন্য এতে পাড়া উচ্ছেদ ও কারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

ম্রো নেতা কামলাই, অংপ্রু ও রাংলাই ম্রো বলেছেন, এখন ২০ একর জমির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু শুরুতে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক করার জন্য কাপ্রুপাড়া, দোলাপাড়া পর্যন্ত বিশাল এলাকায় জরিপ ও খুঁটি স্থাপন করা হয়েছিল। এমনকি কাপ্রুপাড়ার মাঝখানে খুঁটি স্থাপন করে লাল পতাকা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ম্রোদের পানির উৎস লুলাইন খালে দখল করে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ম্রোদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তাঁরা আন্দোলনে নামেন।

সংসদীয় তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর তালুকদার ম্রোদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, তাঁরা প্রকৃত বিষয়টি জানার জন্য এসেছেন। প্রয়োজনে আবারও আসবেন। ম্রোরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেটি নিশ্চিত করা হবে।

নাইটং পাহাড়চূড়াটি চন্দ্রপাহাড় নাম দিয়ে সেখানে সিকদার গ্রুপ ও সেনাকল্যাণ ট্রাস্ট যৌথভাবে ম্যারিয়ট নামে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। জুমের জমি দখল ও কয়েকটি পাড়া উচ্ছেদ হবে অভিযোগে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক বন্ধের দাবিতে ম্রোরা আন্দোলন করে আসছেন।

আজ রোববার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে হেডম্যান (পাড়াপ্রধান), কার্বারি (পাড়াপ্রধান) ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে সংসদীয় কমিটির।