চুপ করে বসে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে রুপালি চত্বরে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন আব্দুল কাদের মির্জা। সোমবার সন্ধ্যা সাতটায়।
সংগৃহীত

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তাঁর বড় ভাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি কী হতে চান। আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। আপনার এলাকায় ত্যাগী কর্মীরা ঘরে শুতে পারেন না, গুলি খেতে হয়, তাঁরা হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। আপনি সেখানে বসে কী করছেন? চুপ করে বসে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’
সোমবার সন্ধ্যায় বসুরহাটের রুপালি চত্বরে আয়োজিত এক সমাবেশে আবদুল কাদের মির্জা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শুনতে খারাপ লাগবে। কী করবেন আপনি? জেলে দেবেন, সেটার অভ্যাস আমাদের অনেক আগেই আছে। আপনার চেয়ে বেশি খেটেছি। মেরে ফেলবেন? কবরের জায়গা দেখিয়ে দিয়েছি। আপনার কাছ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। আপনি বলছেন আমাকে এখান দিয়ে দিয়ো, আমি আপনার পাশে দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। আপনাকে ভালোবাসি, এখনো আপনি আমার রাজনৈতিক আদর্শ। এখনো কোম্পানীগঞ্জের নেতা–কর্মীরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে। শনিবারের পর থেকে আর এই শ্রদ্ধা থাকবে না। স্পষ্ট ভাষায় বললাম।’

আবদুল কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমি নেতার কথা বলব না। উনি কোনো রকমের কথাবার্তা বলছেন না। আমি আজ স্পষ্ট ভাষায় বলব, আপনারা কী জানেন আমি রাজাকারের সন্তান? ওবায়দুল কাদের সাহেব উনি বড় নেতা। উনি ওনার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাকে কোনভাবে নিয়েছেন, আমি জানি না। আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না। আমাদেরকে কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে। আমি কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না। আমি কার খাই, না পরি? আমরা কি কথা বলতে পারব না? থামিয়ে দেবেন? থামিয়ে দিতে পারবেন না। একরাম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। নোয়াখালী আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি বাতিল করতে হবে।’
আবদুল কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘একরাম চৌধুরী নোয়াখালীতে টেন্ডারবাজি, চাকরি–বাণিজ্য, লুটপাট করছে। আমাদের ত্যাগী কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করছে। কেউ কি দেখার নেই? আগামী রোববার সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত আধা বেলা কোম্পানীগঞ্জের সর্বত্র হরতাল। এই হরতালের পরেই আমরা ঢাকায় গিয়ে কর্মসূচি দেব। আমি ইতিমধ্যে নোয়াখালীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখান থেকে কথা বললে নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছায় না।’

আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, ‘আজকে অনেকে বিক্রি হয়ে গেছে। যারা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকে, তারাও বিক্রি হয়ে গেছে। তারা সঠিক কথা তুলে ধরছে না।’ তিনি উপস্থিত নেতা–কর্মীদের প্রশ্ন করেন, ‘আমার পরিবারের কেউ রাজাকার ছিল বলেন? আমার আব্বা হেডমাস্টার ছিলেন। উনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর পাশের রুমে থাকতেন।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী প্রমুখ।