চুরি যাওয়ার ১৫ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে ফিরল নবজাতক

নবজাতক
প্রতীকী ছবি

নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে যাওয়ার ১৫ ঘণ্টা পর দুদিন বয়সী এক নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত দুইটার দিকে শহরের মালাকার মোড়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরপরই ওই নবজাতককে মায়ের কোলে তুলে দিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার বহির্বিভাগ থেকে নবজাতক চুরির এ ঘটনা ঘটে। দুদিন বয়সী ওই ছেলে নবজাতকটি ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছিল। নবজাতককে হাসপাতালটির বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল।

উদ্ধার ওই নবজাতক মো. আনিস মিয়া ও সুমাইয়া আক্তার দম্পতির। দুই মাস আগে অন্তঃসত্ত্বা সুমাইয়া আক্তারকে স্বামীর বাড়ি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নরসিংদীতে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর বাবার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া গ্রামে।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা বলেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে ওই নবজাতককে চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর নানি পরীবানু। হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার বহির্বিভাগে রোগীর লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসকের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। এ সময় সিরিয়াল এগিয়ে আনার চেষ্টা করার জন্য নবজাতকের নানি পরীবানুকে পরামর্শ দেন অজ্ঞাতনামা এক নারী। তাঁর পরামর্শে নবজাতক নাতিকে ওই নারীর কোলে দিয়ে সামনে যান পরীবানু। এ সুযোগে কয়েক মিনিটের মধ্যেই নবজাতককে নিয়ে উধাও হয়ে যান ওই নারী।

পুলিশ বলছে, নবজাতক চুরি হওয়ার পরপরই হাসপাতালটির সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে অভিযুক্ত ওই নারীকে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে গতকাল দুপুরে চুরি হওয়া নবজাতকের নানি পরীবানু নরসিংদী মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে গতকাল রাতে অভিযানে নামে পুলিশ। রাত দুইটার দিকে নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমানের নেতৃত্বে মালাকার মোড়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। যাঁর কাছ থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়, ওই নারী বলেন, এক নারী নবজাতকটিকে তাঁর কাছে রেখে গেছেন। তাঁকে আটক করা হয়েছে। নবজাতককে তাঁর মা সুমাইয়া আক্তারের কোলে তুলে দেয় পুলিশ।
উদ্ধারের পর নবজাতকের মা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমার বুকের ধন আমি ফিরে পাইছি। আমি এতেই খুশি। যে নারী আমার ছেলেকে চুরি করেছিল, আমি তার বিচার চাই।’

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল হক বলেন, ‘আগে আমাদের এ হাসপাতালে নবজাতক চুরির ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। অভিযুক্ত ওই নারীকে চিহ্নিত করে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা গেছে, এটাই আনন্দের। উদ্ধারের পর নবজাতক ও তাঁর মাকে আমরা এ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি।’

নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে নবজাতক চুরি করা নারীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে যে নারী নবজাতক চুরি করেছেন, তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।