চুরির অভিযোগে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আটটি অটোরিকশা চুরির ঘটনায় মো. ইয়াসিন নামের এক অটোরিকশাচালককে চোর আখ্যা দিয়ে আটকে রেখে মারধর করা হয়। পরে তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয় পুলিশের একটি টহল দল। এ ঘটনায় সোর্সসহ পুলিশের তিন সদস্য আহত হন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম, কনস্টেবল ইকবাল হোসেন ও সোর্স শাহ আলম। গতকাল শনিবার রাত দুইটার দিকে উপজেলার কুড়িপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ৭ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার কুড়িপাড়া এলাকার মনির হোসেনের গ্যারেজে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা গ্যারেজের তালা ভেঙে পিকআপ ভ্যানে করে ৯টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মনির হোসেন। কিন্তু অভিযোগের ছয় দিন পরও চুরি হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

মনির হোসেন জানান, চুরির আগের দিন ইয়াসিন গ্যারেজের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। এরপরই ৯টি অটোরিকশা চুরি হয়। এ ব্যাপারে তাঁকে এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সামনে হাজির করা হলে ইয়াসিন অটোরিকশা চুরির ব্যাপারে বন্দরের রামনগরের সুমন ডাকাতের নাম বলেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অটোরিকশাচালক ইয়াসিনকে আটক ও মারধরের ঘটনাটি পুলিশ জানতে পেরে শনিবার রাত দুইটার দিকে মনিরের ভাড়াটিয়া বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় এলাকার মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিলে এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় টহল পুলিশের এসআই শহীদুল ইসলাম, কনস্টেবল ইকবাল ও সোর্স শাহ আলম আহত হন।

তবে বন্দর থানার এসআই শহীদুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে তিনি টহল ডিউটিতে ছিলেন। অটোরিকশাচালককে আটকে রেখে নির্যাতনের খবর ওসি ও ডিউটি অফিসারের মুঠোফোনে জানতে পেরে ইয়াসিনকে উদ্ধার করতে যান। এ সময় মসজিদের মাইকে ডাকাতির ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে ইয়াসিনকে নিয়ে পালিয়ে যান মনিরের লোকজন। এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা বা মারধর করেননি।

ইয়াসিনের মা সামসুন্নাহার জানান, তাঁর ছেলে একজন অটোরিকশাচালক। ছেলেকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে পাঁচ দিন ধরে নির্যাতন করা হচ্ছে। বর্তমানে ছেলে কোথায় আছেন, জানেন না তিনি। বিষয়টি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ৯৯৯–এ ফোন আসে একজনকে আটকে রেখে মারধর করা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দেওয়া হলেও পোশাক পরা পুলিশ দেখে লোকজন চলে যান।