চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আশিকুল হক বৃহস্পতিবার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন
প্রথম আলো

জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৌফিক এলাহী ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতাকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন একাংশের নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ ঘোষণা দেন। এ সময় তাঁরা দুই দফা দাবি তুলে ধরেন।

দলীয় সূত্র জানায়, যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অছাত্র ও বিতর্কিতদের প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রদলের চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা, পৌর ও সরকারি কলেজসহ পাঁচটি ইউনিটের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এভাবে কমিটি গঠন করার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা, পৌর ও সরকারি কলেজ ছাত্রদলের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. আশিকুল হক। এ সময় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিদ হাসান মালিক, সদর উপজেলা ছাত্রদলের তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক আল বেলাল, রাকিব রায়হান ও হাসানুজ্জামান, পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিদ হাসান  এবং চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে আগামী তিন দিনের মধ্যে ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত পাঁচটি কমিটি বাতিল করে তৃণমূল ছাত্রদলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি পুনর্গঠন ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খানের অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য তিন দিনের সময়সীমা (আল্টিমেটাম) বেঁধে দেওয়া হয়। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে আগামী তিন দিনের মধ্যে ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত পাঁচটি কমিটি বাতিল করে তৃণমূল ছাত্রদলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি পুনর্গঠন ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খানের অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করা।  

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব কমিটি গঠনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকায়  তৌফিক এলাহী ও মোমিন মালিতাকে চুয়াডাঙ্গাতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশনা এবং খুলনা বিভাগীয় ও জেলা ছাত্রদলের নেতাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে যোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আসলে যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরাই অযোগ্য।’

কেন্দ্র থেকে গঠিত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অর্থ–বাণিজ্যসহ নানাভাবে প্রভাবিত হন এবং কমিটি গঠনে যোগ্য ও ত্যাগী নেতা–কর্মীদের অবমূল্যায়ন করেন। তাঁরা অযোগ্যদের নেতৃত্বে আনেন, যা তৃণমূলের কর্মীদের হতাশ করেছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫ জুন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়। সবার মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

কিন্তু কেন্দ্র থেকে গঠিত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অর্থ–বাণিজ্যসহ নানাভাবে প্রভাবিত হন এবং কমিটি গঠনে যোগ্য ও ত্যাগী নেতা–কর্মীদের অবমূল্যায়ন করেন। তাঁরা অযোগ্যদের নেতৃত্বে আনেন, যা তৃণমূলের কর্মীদের হতাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারীরা বলেন, এভাবে কমিটি গঠন করায় দলের প্রতি অনাস্থা দেখা দিয়েছে। এ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে সুপরিকল্পিতভাবে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খানকে অব্যাহতি দিয়ে সহসভাপতি তৌফিক এলাহীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তৌফিক এলাহী ও মোমিন মালিতা মিলে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ছাত্রদলের পাঁচটি কমিটি একতরফা গঠন করে দলের ইতিহাস–ঐতিহ্যের কবর রচনা করেছেন।

ছাত্রদল নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে চুয়াডাঙ্গা জেলায় যেসব ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব কমিটির বেশির ভাগ নেতা পদত্যাগ করবেন এবং তৌফিক ও মোমিনকে প্রতিহত করবেন।