চেয়ারম্যা‌নের বিরুদ্ধে সরকা‌রি গাছ কাটার অভিযোগ

অনুম‌তি ছাড়াই সরকা‌রি গাছ কা‌টেন ইউপি চেয়ারম্যান। পরে সেই গাছগু‌লো জব্দ ক‌রে উপজেলা প্রশাসন। বিরল উপ‌জেলা, দিনাজপু‌র, ১৮ এপ্রিল
প্রথম আলো

মসজিদে দান করবেন বলে এলাকাবাসীকে জানিয়ে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে রোববার বিকেলে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এক করাতকল থেকে ১৪টি গাছ জব্দ করেন উপজেলা প্রশাসন।

ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিনাত রহমান। আমজাদ হোসেন উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০০ সালে চৌমুনী বাজার হয়ে বিজোড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পাকা সড়ক হয়ে ভগবতীপুর দাশপাড়া গ্রামের রাস্তায় গাছ লাগানো হয়। স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমিতির মাধ্যমে গাছগুলো লাগানো হয়েছিল। নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদ পূর্তি হলে প্রকাশ্যে নিলামে গাছগুলো বিক্রি করে বন বিভাগ ও স্থানীয় সমিতির উপকারভোগীরা গাছ বিক্রির অর্থ প্রাপ্য হবেন। কিন্তু গতকাল শনিবার ২০ বছর বয়সী ১৪টি শিশু, কড়ই ও নিমগাছ কেটে নিয়ে যান ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ। এলাকাবাসী ইউএনওকে মুঠোফোনে ও অফিসে গিয়ে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানান। তাঁরা বলেন, গাছ বিক্রির টাকা মসজিদে দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান সেই গাছগুলো কেটেছেন।

অভিযোগ পেয়ে ইউএনও রোববার বিকেল চারটার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবের মোহাম্মদ শোয়াইবকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আফজাল হোসেনের করাতকল থেকে গাছগুলো জব্দ করেন।

করাতকলের মালিক আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ৩টি গাছ কিনেছি ৬০ হাজার টাকায়। বাকি দুটি গাছ চেয়ারম্যান তাঁর নিজের আসবাবপত্র বানানোর জন্য ফাড়াই করেছেন। বাকি গাছগুলো বিক্রির জন্য এখনো রয়েছে।’

ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ বলেন, ‘গাছগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। আর যাঁরা গাছ লাগিয়েছিলেন, তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। গাছগুলো বিক্রি করে সেই অর্থ মসজিদে দেওয়া হবে।’ তবে নিয়ম মেনে গাছগুলো কাটা হয়নি বলেও তিনি স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে ইউএনও জিনাত রহমান বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার জাবের মোহাম্মদ শোয়াইবকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। তিনি ১৪টি গাছ জব্দ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারি গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে একটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটি গাছগুলোর মূল্য নির্ধারণ করবে। পরে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হবে এবং সেই অর্থ ন্যায্যতার ভিত্তিতে উপকারভোগীদের প্রদান করে বাকি অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে। কিন্তু ওই চেয়ারম্যান কোনো প্রক্রিয়া না মেনে গাছগুলো কেটেছেন।