চেয়ারম্যানের সম্মানী ভাতা পান গরিব, অসহায়রা

জয়পুরহাটের রুকিন্দীপুর ইউপির চেয়ারম্যান এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি নির্বাচনী ইশতেহারে অসহায়দের মধ্যে টাকা বিতরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

দুস্থদের মধ্যে নিজের সম্মানী ভাতার টাকা বিতরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির। গতকাল রোববার আক্কেলপুরের কুড়ানীবাজারে
ছবি: প্রথম আলো

দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়তে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আহসান কবির। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে গত চার বছরে ঈদুল ফিতরের সময় সম্মানীর টাকা বিতরণ করেছেন দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে। নির্বাচনী ইশতেহারেও সম্মানীর টাকা অসহায়দের মধ্যে বিতরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

গত শনিবার ইউনিয়নের পূর্ব মাথাপুর তিন-চারমাথার মোড় ও হালি মোড়ে ১৫ মাসের সম্মানী ২১৯ জন দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তির মধ্যে বিতরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান। প্রত্যেককে দেওয়া হয় ৫০০ টাকা। গতকাল রোববারও চলে এ কার্যক্রম। প্রতি মাসে ইউপি চেয়ারম্যান সম্মানী ভাতা হিসেবে পান ৯ হাজার টাকা।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান এলাকায় সম্পদশালী ব্যক্তি। তাই তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে যে ভাতা পান, তা নিজের প্রয়োজনে খরচ না করে অসহায় ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করেন। নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পর থেকে আহসান কবির সম্মানীর টাকা অসহায় ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করছেন।

শনিবার সহায়তা পাওয়া ইসমাইলপুর গ্রামের বাসিন্দা রাশেদা বেগম বলেন, ‘হাংকে চিয়ারমিন (চেয়ারম্যান) মোক পাঁচ শ টাকা দিচে। মুই এই বাড়তি টাকা দিয়ে নাতনির কাপড় কিনে দিমু। আগেরবার ঈদতও মোক চিয়ারমিন টাকা দিছিল।’

আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জামালগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আছিয়া খানম বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে অনেকের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা আছে। কিন্তু আহসান কবির একজন ব্যক্তিক্রম জনপ্রতিনিধি। তিনি সম্মানী ভাতার টাকা নিজের প্রয়োজনে খরচ করতে পারতেন। তা না করে ভাতার সব টাকা গরিব ও অসহায় মানুষদের বিলিয়ে দেন। এটিও তাঁর মহত্ত্বের বড় উদাহরণ।

ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি মুরগির হ্যাচারি, মুরগির খাদ্য ব্যবসায়ী। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি রুকিন্দীপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

আহসান কবির বলেন, এবার ঈদের আগে তিনি বকেয়াসহ ১৫ মাসের সম্মানী ভাতা পেয়েছেন। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ২১৯ জন গরিব ও দুস্থ মানুষের মধ্যে তা বিতরণ করেছেন। জাকাত ও ফিতরার টাকাও আলাদা করে দিয়েছেন। যত দিন চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন, তত দিনই এ ধারা অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করেন আহসান কবির।

রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজারুল আলম বলেন, চেয়ারম্যান ধনাঢ্য ব্যক্তি। তাঁর এমন উদারতায় ইউনিয়নের বাসিন্দা হিসেবে গর্ব হয়।