‘চোখের সামনে ঘেরগুলো ভেসে গেল, কিচ্ছু করার নেই’

জোয়ারে পানির চাপে ভেঙে যায় বাঁধ। ঘর-বাড়ি, মাছের ঘের রক্ষায় বাঁধ মেরামতের কাজ করেন স্থানীয়রা। হুড়কা, রামপাল, বাগেরহাট
প্রথম আলো

পূর্ণিমার জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে দুই সহস্রাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে মাছচাষিদের কয়েক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল বুধবারের জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে এসব মাছের ঘের ভেসে যায়। জেলার রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে ৬৭ হাজার চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের ঘের আছে। চলতি অর্থবছরের এই জেলায় মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।

মৎস্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২ হাজার ৯১টি মৎস্যঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রামপালে ৯১৭টি, মোংলায় ৬৮৫, মোরেলগঞ্জে ১২৫ এবং শরণখোলা উপজেলায় ১৪৪টি মাছের ঘের ভেসে গেছে।

রামপাল উপজেলার তালবুনিয়া গ্রামের মো. সোহানুর রহমান বলেন, গত মঙ্গলবার রাতের জোয়ার থেকে এলাকায় পানি ঢুকছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনের করা প্রায় প্রতিটি বাঁধ উপচে পানি এসে তলিয়ে যাচ্ছে মাঠ-গ্রাম। চোখের সামনে ঘেরগুলো ভেসে গেল, কিচ্ছু করার নেই।

চিংড়িচাষি শাহরিয়ার শেখ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত তিনটি জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘের ভেসে গেছে। এতে আমার ঘেরে ছাড়া কয়েক লাখ টাকার বাগদা চিংড়ির রেণু বের হয়ে গেছে।’

মৎস্য বিভাগের বাগেরহাট কার্যালয়ের বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) এ এস এম রাসেল গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বাগেরহাটের রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা—এই চার উপজেলা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ২ হাজার ৯১টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।