চোর সন্দেহে নির্যাতনে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুতে ১২ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৩

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় মুঠোফোনচোর সন্দেহে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে নিহত মাদ্রাসাছাত্রের বাবা মশিয়ার গাজী বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে পাঁচ থেকে ছয়জনকে। পুলিশ গতকাল রাতে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন মনিরামপুর উপজেলার খোজালিপুর গ্রামের মাহামুদ হোসেনের ছেলে মো. লাভলু (২৫), একই গ্রামের মিজানুর গাজীর ছেলে আলতাফ হোসেন (৩০) ও ইউসুফ আলীর ছেলে সোহাগ হোসেন (১৯)।

গতকাল বিকেলে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাদ্রাসাছাত্র মামুন হাসান (২২)। এর আগের দিন মঙ্গলবার রাতে হাত-পা বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। মামুন হাসান মনিরামপুর উপজেলার খোজালিপুর গ্রামের মশিয়ার গাজীর ছেলে। তিনি মনিরামপুর আলিয়া মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে খাবার খেয়ে রাত ১১টার দিকে মামুন পাশে তাঁর খালা রেহেনা বেগমের দোকানে যান। তখন তাঁর বন্ধু আরমান তাঁকে ডেকে পাশে হরিহর নদের পাড়ে নিয়ে যান। সেখানে দল পাকিয়ে লোকজন এসে মামুনকে নদের পানিতে ফেলে মারধর করেন। এরপর গ্রামের আয়নালদের বাড়িতে নিয়ে হাত-পা বেঁধে তাঁকে ফের মারধর করা হয়। দিবাগত রাত তিনটা পর্যন্ত তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর মা সেখানে গিয়ে ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তাঁকে জানানো হয়, তাঁর ছেলে মোবাইল চুরি করেছেন। পরের দিন বুধবার সকালে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বেলা তিনটার দিকে মামুন মারা যান।

মনিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় বুধবার রাতে মামলা হয়েছে। রাতেই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মামুন হাসানের লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’