ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা শহরের একটি মিলনায়তনের কক্ষে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে ডেকে এনে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে ছাত্রলীগের ওই নেতাকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আসাদুল হক ওরফে শাকিল রায়পুর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও তরুণীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল বিকেল চারটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আসাদুল ওই তরুণীর (১৮) মুঠোফোনে ফোন করে তাঁকে বিয়ে করার জন্য ওই মিলনায়তনে আসতে বলেন। আসাদুলের কথামতো রাত ৯টার দিকে বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ওই তরুণী সেখানে আসেন। সেখানে আসার পর একটি কক্ষে নিয়ে আসাদুল কেক ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে তাঁকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করান। কোমল পানীয় খাওয়ার পরই তরুণীর শরীরে ঝিমুনি আসে। এ সুযোগে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন আসাদুল। পরে বিয়ের কথা বললে আসাদুল ওই তরুণীকে চুপচাপ বাড়ি চলে যেতে বলেন। ওই সময় কান্নাকাটি করলে তরুণীকে ছাদের ওপরের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় । এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশে থাকা লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। এ সময় আসাদুল হক ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।

ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ‘ছয় মাস ধরে আসাদুলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গতকাল রাত ৯টার দিকে আমাকে বিয়ে করার কথা বলে ওই অডিটরিয়ামে নেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কাজি দেখতে না পেয়ে আমি আসাদুলের কাছে কাজি কোথায় জানতে চাইলে তিনি আমাকে বলেন, “কাজি আনতে লোক পাঠানো হয়েছে।” এর মধ্যে সে আমাকে নেশাজাতীয় দ্রব্যমিশ্রিত ওই কোল্ড ড্রিকস খেতে দেয়। এতে আমার ঘুম ঘুম ভাব হয়। এই সুযোগে আমাকে ধর্ষণ করা হয়।’

ওই তরুণীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুল হক বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার নামে স্ক্যান্ডাল ছড়ানোর জন্যই এই মামলা করা হয়েছে। আমার দলেরই কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি ওই সময় অডিটরিয়ামে ছিলামই না, তাহলে আমি কীভাবে এ ঘটনায় জড়িত থাকব।’

এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসাইন বলেন, ‘আমি এ ঘটনা শুনেছি। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আমি পেয়েছি। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

এ বিষয়ে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক দেবদুলাল দে জানান, ওই তরুণীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে আসাদুল হকের বিরুদ্ধে ওই তরুণী মামলা করেছেন। তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসাদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।