ছাত্রলীগ সভাপতির ইয়াবা সেবনের ভিডিও ভাইরাল

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলীম সিকারি। সম্প্রতি তাঁর ইয়াবা সেবন করার একটি ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আলীম মাদক সেবনের কথা স্বীকার করেছেন।

আলীম সিকারি
সংগৃহীত

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলীম সিকারির মাদক সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে তাঁকে একটি টিনসেড ঘরে বসে ইয়াবা সেবন করতে দেখা যাচ্ছে। ওই ভিডিওতে ইয়াবা সেবনের দৃশ্য থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এস এম মিজানুর রহমান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এস এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিওটি দেখে স্পষ্ট বুঝা যায়, ওই যুবক মাদক সেবন করছেন এবং তা ইয়াবা। ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ নেই, কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে।

আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়ার কেদারপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের বাসিন্দা আলীম সিকারি (৩০)। কয়েক বছর আগে পদ্মার ভাঙনে তাঁদের বসতভিটা বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নড়িয়া উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া করে থাকেন। ২০১৩ সালে কেদারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সাল থেকে নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ওই প্রকল্পের ঠিকাদার বেঙ্গল গ্রুপের বাঁধ নির্মাণের কাজের জন্য বালু সরবরাহ করেন তিনি।

এক সপ্তাহ ধরে একটি ভিডিও নড়িয়া ও শরীয়তপুর জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ভাইবারের মাধ্যমে মুঠোফোনে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । ওই ভিডিওতে ছাত্রলীগ নেতা আলীম সিকারিকে ইয়াবা সেবন করতে দেখা যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ ধরে একটি ভিডিও নড়িয়া ও শরীয়তপুর জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ভাইবারের মাধ্যমে মুঠোফোনে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে । ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রথম আলোর হাতেও আসে। ওই ভিডিওর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি কেদারপুরের একটি টিনসেডের ঘরে বসে ছাত্রলীগ নেতা আলীম সিকারি মাদক গ্রহণ করছেন। তাঁকে সহায়তা করছেন আরেক যুবক।

বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের নেতা আলীম সিকারি মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে মাদক সেবনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করছি। মাঝখানে সে সম্পর্কের অবনতি হয়। তখন কিছুদিন মাদক সেবন করেছিলাম। ওই ভিডিওটা এক বছর আগের। আমার মুঠোফোনেই ছিল, কীভাবে সেটা ছড়িয়ে পড়েছে, তা জানি না। কিন্তু আমি এখন মাদক সেবন করি না। এখন বালু সরবরাহের ব্যবসা করি। ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এ অপতৎপরতা চালাচ্ছে।’

আলীম সিকারির এক স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলীমের কারণে আমরা বিব্রত। মানুষের মুখে শুনেছি, সে মাদক সেবনই নয়, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। মাদকের নেশা ছাড়ানোর জন্য পারিবারিকভাবে অনেক চাপ সৃষ্টি করেছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’

জানতে চাইলে কেদারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন সিকারি বলেন, ‘আলীম কীভাবে মাদক সেবনের সাথে জড়িয়ে পড়েছে, তা আমরা বলতে পারব না। লোকমুখে তাঁর মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার খবর জেনেছি।’

এ বিষয়ে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলীম সিকারির বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। তাঁর মাদক সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাও আমরা শুনিনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’