ছিলেন রোগী, হলেন আসামি

খোরশেদ আলম। দীর্ঘদিন দুবাইপ্রবাসী ছিলেন। বছর দুয়েক আগ থেকে দেশে শুরু করেন কম্পিউটার ব্যবসা। পা পিছলে পড়ে আহত হয়ে বাসায় শয্যায় ছিলেন তিনি। আর ওই সময়ে নগরের চান্দগাঁও এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। আশপাশের কেউ ঘটনা সম্পর্কে জানে না। মামলা হওয়ার পর সবাই জানতে পারে। আর এই মামলায় আসামি হন ব্যবসায়ী খোরশেদ। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। অথচ তাঁকে বিএনপির কর্মী উল্লেখ করে পুলিশ আদালতে গত মাসের শেষের দিকে অভিযোগপত্রও দিয়ে দেয়।

ঘটনা ঘটেছিল নগরের চান্দগাঁও মৌলভী বাজার এলাকায় ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ২টায়। কিন্তু এর সাত দিন আগেই গত ২৩ সেপ্টেম্বর পা পিছলে পায়ের লিগামেন্টে মারাত্মকভাবে আঘাত পান খোরশেদ। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় ছিলেন। ওই সময় চলাফেরায় অক্ষম ব্যবসায়ী খোরশেদ গভীর রাতে তাঁর বাসা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গিয়ে কীভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকার জনসাধারণের মধ্যে। তাঁর ছোট ভাই দিদারুল আলম নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর মামলা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার চেয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়। তিনি বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দেন একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে। তিনি লিখিত নোটিশের মাধ্যমে নির্ধারিত দিনে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, বাদী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হন সহকারী পুলিশ কমিশনারের অফিস কক্ষে। স্থানীয়েরা জানান খোরশেদ বিএনপির কেউ নন।

খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করায় তাঁকে নাশকতার মামলায় জড়ানো হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। আর ঘটনার সময় ছিলেন বিছানায়।
জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, নিরপরাধ কেউ যাতে আসামি না হয় সতর্কভাবে তদন্ত করতে বলা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। যখন এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয় তখন তিনি চান্দগাঁও থানায় ছিলেন না।