ছেলে না হওয়ার ক্ষোভে নবজাতক কন্যাকে হত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জে ছেলেসন্তান না হওয়ার ক্ষোভে ২৯ দিন বয়সী নবজাতক কন্যাসন্তানকে আছড়ে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা পাড়াগাঁও এলাকায় ঘটে এই নির্মম ঘটনা।

মীম আক্তার নামের ওই শিশুটির বয়স ছিল ২৯ দিন। শিশুটির মা খাদিজা আক্তার দক্ষিণপাড়াগাঁও এলাকার হারুনুর রশিদের মেয়ে। শিশুটির বাবা কামাল হোসেন (২৮) এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মা খাদিজা আক্তার। কামাল ভুলতা মাছিমপুর হাউলিপাড়া এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে। আড়াইহাজার উপজেলার ছনপাড়া এলাকায় একটি হোটেলের শ্রমিক তিনি। বিয়ের পর থেকে কামাল তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণপাড়াগাঁও এলাকায় তাঁর মামা মনির হোসেনের বাড়িতে থাকেন।

খাদিজা আক্তার প্রথম আলোকে জানান, দুই বছর আগে কামাল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়। কয়েক মাস আগে তিনি গর্ভবতী হলে কামাল হোসেন ছেলেসন্তান জন্ম নেবে বলে প্রত্যাশা করেন। তবে ২৯ দিন আগে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন খাদিজা। সে থেকেই খাদিজা ও তাঁর সন্তানের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কামাল। নানা সময় খাদিজাকে মারধরসহ মীমকে হত্যা করার চেষ্টা চালান কামাল।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে খাদিজা প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার ভোরে মীম কান্না করছিল। এতে কামালের ঘুম ভেঙে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মায়ের কোল থেকে মীমকে কেড়ে নিয়ে খাটের ওপর আছড়ে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই কান্না থেমে যায় মীমের। খাদিজা বলেন, ‘তখনো বুঝতে পারিনি ওর কী হয়েছে। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারি আমার মা আর বেঁচে নেই।’

ঘটনাস্থলে যাওয়া ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আনিচুর রহমান বলেন, শিশুটিকে তার মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে খাটের ওপর আছড়ে ফেলেন শিশুটির বাবা। সেখানেই শিশুটির মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটির মাথার পেছনের অংশে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কামাল হোসেনকে ধরতে ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।