ছোট্ট শিশু দেয়ালিকা, অনন্য প্রতিভা তার

ছোট শিশু দেয়ালিকা সাড়ে চার বছর বয়সে মুখস্থ করে ফেলেছে পৃথিবীর ১৯০টি দেশের রাজধানীর নাম। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের গুহ সড়কের বাড়িতে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ছোট্ট শিশু দেয়ালিকা। বয়স সবে মাত্র সাড়ে চার বছর। এই বয়সেই সে মুখস্থ করে ফেলেছে পৃথিবীর ১৯০টি দেশের রাজধানীর নাম। যে কেউ কোনো দেশের নাম বললেই সঙ্গে সঙ্গে সে বলে ফেলে ওই দেশের রাজধানীর নাম। শুধু দেশের রাজধানীর নামই নয়, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফলের ইংরেজি নামও বলে ফেলে মুহূর্তেই।

এত কম বয়সে এই দক্ষতা তার অনন্য প্রতিভারই পরিচয় দেয়। দেয়ালিকার পুরো নাম দেয়ালিকা চৌধুরী। বাবা দেবাশীষ চৌধুরী ব্যবসায়ী, মা সুস্মিতা দত্ত গৃহিণী। তাঁরা শ্রীমঙ্গল শহরের গুহ সড়কে বাস করেন। দেয়ালিকা এ বছর শহরের নটর ডেম স্কুল অ্যান্ড কলেজে নার্সারি ক্লাসে ভর্তি হয়েছে। দেয়ালিকার এই কৃতিত্বের পেছনে তার মায়ের অবদানই বেশি।

কথা হয় দেয়ালিকার মা সুস্মিতা দত্তের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গত বছরের

ডিসেম্বর থেকে দেয়ালিকাকে খেলাচ্ছলে তিনি বিভিন্ন দেশের নাম ও রাজধানীর নাম শেখাতে

শুরু করেন। তাঁর মেয়ের স্মরণশক্তি খুবই ভালো। খুব সহজেই সে এগুলো মনে রাখছে দেখে তিনিও উৎসাহী হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সব দেশের নাম ও রাজধানীর নাম সংগ্রহ করে তাকে শেখাতে লাগলেন। কিছু দেশের নাম ও রাজধানীর নাম তাঁর নিজেরই উচ্চারণ করতে কষ্ট হয়েছে। তিনি এই উচ্চারণগুলো নিজে গুগল ও ইউটিউবের সাহায্য নিয়ে শিখে দেয়ালিকাকে শিখিয়েছেন।

সুস্মিতা দত্ত বলেন, ‘যখন বাসায় কোনো সবজি বা ফল আনা হয়, দেয়ালিকা জিজ্ঞেস করে এর ইংরেজি নাম। আমি তাকে বলে দিই। সে শুনেই তা মনে রাখে। এভাবেই সে শিখে ফেলে। তার ইচ্ছাশক্তিই তাকে এগুলো শিখতে সহযোগিতা করে। আমি শুধু তাকে একবার-দুবার বলে দিই। এ বয়সেই তার জানার আগ্রহ প্রবল। পড়াশোনাতেও তার খুব ঝোঁক।’

গত সোমবার দেয়ালিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট এই শিশুটি কয়েকটি পুতুল নিয়ে খেলছে। তার সঙ্গেই রয়েছে বই-খাতা। তার লেখার খাতাগুলোতে হাতের লেখাও চমৎকার। তাকে বেশ কয়েকটি দেশের নাম বলার সঙ্গে সঙ্গেই সে বলে দিচ্ছিল ওই দেশের রাজধানীর নাম। এই বয়সের একটি শিশুর এমন প্রতিভা অবাক করবে যে কাউকেই।

শ্রীমঙ্গল দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের প্রভাষক অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, শিশুদের সবচেয়ে বড় পাঠশালা

হচ্ছে তার পরিবার। শিশুদের ওপর পড়াশোনা চাপিয়ে দিয়ে কিছু করা যায় না। দেয়ালিকার মা যা করছেন, এভাবেই শিশুদের ছোটবেলা থেকে খেলাচ্ছলে সবকিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হয়। খেলাধুলা ও পরিবারের সঙ্গে চলাফেরার মধ্য দিয়েই শিশুরা সবকিছু ভালোভাবে জানতে পারে, শিখতে পারে। এ কারণে পরিবারে শিশুদের জন্য এ ধরনের পরিবেশ তৈরি করে রাখা উচিত।