ছোট বোনের বিপদের কথা বলে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর শিবপুরে ছোট বোনের বিপদের কথা বলে এক নার্সকে (২০) ডেকে নিয়ে চারজন মিলে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই নার্সের বাবা দুজনের নাম উল্লেখসহ চারজনকে আসামি করে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার এক আসামিকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। বুধবার বিকেলে মামলা হওয়ার পর ওই রাতেই মজলিশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনির হোসেন নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ বিকেলে মনির হোসেনকে নরসিংদীর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে জেলহাজতে পাঠান।

ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী নরসিংদী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। ছোট বোনের বিপদের কথা শুনে মজলিশপুর এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি।

মামলার চার আসামির মধ্যে দুজন হলেন মজলিশপুর এলাকার হারুন ভূঁইয়া (২০) ও মনির হোসেন (২০)। অন্য দুই আসামির নাম-পরিচয় জানেন না মামলার বাদী।

মনির হোসেন (আসামি) ওই তরুণীকে জানান, তাঁর ছোট বোন সামনের একটি বাড়িতে আছে। তাঁর পিছু পিছু সেদিকে যেতে শুরু করলে কলাখেতের সামনে আসার পর হারুন ভূঁইয়া ও অজ্ঞাত আরও দুজন সেখানে আসেন। পরে তাঁরা চারজন মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর ছোট বোন শিবপুরের মজলিশপুর এলাকার এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যান। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রতিবেশী হারুন ভূঁইয়া (আসামি) মুঠোফোনে কল করে ওই তরুণীকে তাঁর ছোট বোন বিপদে পড়েছে জানিয়ে মজলিশপুরে যেতে বলেন। পরে ওই তরুণী তাঁর ছোট বোনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেন। কিন্তু কল রিসিভ না হওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে শিবপুরের মজলিশপুরের উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তিনি শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশায় করে মজলিশপুরে অবস্থিত আত্মীয় বাড়ির দিকে যেতে থাকেন। পথে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাঁর পথ আটকান মনির হোসেন (আসামি)। তিনি ওই তরুণীকে জানান, তাঁর ছোট বোন সামনের একটি বাড়িতে আছে। তাঁর পিছু পিছু সেদিকে যেতে শুরু করলে কলাখেতের সামনে আসার পর হারুন ভূঁইয়া ও অজ্ঞাত আরও দুজন সেখানে আসেন। পরে তাঁরা চারজন মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় মুঠোফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন আসামিরা।

মামলার বাদী ওই তরুণীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই অজ্ঞাতনামা দুই আসামি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু হারুন ও মনির মুঠোফোনে তাঁদের স্থানীয় ওই আত্মীয়র বাড়িতে কল করে জানান, তাঁর মেয়ে (নার্স) অসুস্থ অবস্থায় একটি কলাখেতে পড়ে আছেন। পরে তাঁর ছোট মেয়েসহ স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের হাতে তাঁর বড় মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে এই দুজনও পালিয়ে যান। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই নির্মম ঘটনার বিচার চান।

শিবপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কালাম জানান, এরই মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ওই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। অভিযুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।