ছড়ার বালু তোলা বন্ধে নেই কার্যকর পদক্ষেপ

বালু তোলায় চা–বাগানের কিছু এলাকায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। ট্রাক, ট্রলি চলাচল করায় সড়ক নষ্ট হচ্ছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কামারছড়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রলিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত সোমবার
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা–বাগানের সুনছড়া ও কামারছড়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে চা–বাগানের কিছু এলাকায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। বালু নিয়ে যাওয়ার জন্য বাগানের ভেতর দিয়ে ট্রাক, ট্রলি চলাচল করছে। ফলে রাস্তাঘাট-কালভার্ট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। চা–বাগান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, কামারছড়া থেকে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক বালু উত্তোলন করে টুকরিতে করে চা–বাগানের জমিতে স্তূপ করে রাখছেন। সেখান থেকে ট্রাক, ট্রলি ও পিকআপে তুলে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কামারছড়ার তীরে চা–গাছ লাগানোর টিলা খুড়েও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে টিলা ধসের আশঙ্কা রয়েছে। কার কথায় বালু তোলা হচ্ছে, জানতে চাইলে বালুশ্রমিকেরা বলেন, কালিছলি গ্রামের রশীদ উল্যা ও ইব্রাহিম আলী তাঁদের কাজে লাগিয়েছেন। প্রতিদিন কামারছড়া ও সুনছড়া থেকে ৮ থেকে ১০ গাড়ি বালু যায়।

চা-বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে গত ১০ জুন ও ২৬ জুন আলীনগর চা–বাগানের ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুর আহমেদ চৌধুরী জেলা প্রশাসক বরাবরে দুই দফা লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, সুনছড়া ও কামারছড়া বালুমহাল নয়। তারপরও রশীদ উল্যা ও ইব্রাহিম আলীর নেতৃত্বে একটি চক্র অবৈধভাবে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করছে। এ কারণে ছড়ার আশপাশের পরিবেশ নষ্ট আর চা–বাগানের কিছু এলাকায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। বালু নিয়ে যাওয়ার জন্য চা–বাগানের ভেতর দিয়ে ট্রাক, ট্রলি চলাচল করছে। ফলে রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এসব কারণে চা–পাতা পরিবহন ও বাগানের অন্য দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এ অভিযোগ দেওয়ার পাঁচ মাস পরও প্রশাসনিকভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ব্যবস্থাপক হাবিব বলেন, অবৈধভাবে বালু তোলার বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর দুই দফা আবেদন করেছেন এবং এর অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নিয়মিত ফোন করছেন। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ বালুভর্তি পিকআপ জব্দ করেছে।

অভিযোগ সম্পর্কে রশীদ উল্যা বলেন, তিনি ও ইব্রাহিম আলী ঢালাওভাবে বালু উত্তোলন করছেন না। তাঁরা মাঝেমধ্যে ঠেলাগাড়ি দিয়ে নিজেদের প্রয়োজনে সামান্য বালু উত্তোলন করেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মেহেদী হাসান জানান, বাগানের ব্যবস্থাপকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।