ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

আখমাড়াই বন্ধের প্রতিবাদে সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। আজ বুধবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কে রংপুর চিনিকলের সামনেপ্রথম আলো

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে রংপুর চিনিকলসহ দেশের ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন সহস্রাধিক আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারী। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের চিনিকলের সামনের কয়েকটি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় উভয় দিকে শতাধিক ছোট–বড় যানবাহন আটকা পড়ে।

সংবাদ পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ এসে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলে শুরুতে তা অগ্রাহ্য করে অবরোধ চালিয়ে যান চাষি-শ্রমিক-কর্মচারীরা। পরে বেলা ১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প সংস্থার সদর দপ্তর থেকে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে অব্যাহত লোকসানে ২০২০-২১ মৌসুমে রংপুর চিনিকলসহ ৬টিতে মাড়াই বন্ধ রাখার নির্দেশনা আসে। এই মৌসুমে শুধু ৯টি চিনিকলে আখমাড়াই করার নির্দেশসংবলিত ওই চিঠি পাওয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।

অবরোধ চলার সময় বক্তব্য দেন রংপুর চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সহসম্পাদক ফারুক হোসেন, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, আখচাষি কল্যাণ গ্রুপের সভাপতি জিন্নাত আলী প্রধান, সহসম্পাদক আবদুর রশিদ, ইক্ষু উন্নয়ন কর্মী সংসদের সম্পাদক শাহজাহান আলী প্রমুখ।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের যৌথ সভা হবে। সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আখমাড়াই বন্ধের প্রতিবাদে সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। আজ বুধবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কে রংপুর চিনিকলের সামনে
প্রথম আলো

বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প সংস্থার চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সীমাহীন দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বিলাসবহুল গাড়িসহ সব ধরনের কেনাকাটায় ব্যাপক লুটপাটের জন্য পুরো সংস্থা লোকসানের মুখে পড়েছে। চিনিশিল্প আধুনিকায়নের নামে বিশ্বব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ না করে সব চিনিকলকেই ঋণে জর্জরিত করে রেখে বিদেশে প্রচুর টাকা পাচার করেছেন এই আমলারা। এখন তাঁদের অপকর্মের ভার সাধারণ চাষি ও শ্রমিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান দেশের সব চিনিকল বন্ধ করার মাধ্যমে চিনিশিল্পটাকেই ধ্বংস করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা অবিলম্বে সব চিনিকল আধুনিকায়নের মাধ্যমে এগুলো চালু এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। নাহলে আরও বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

আজকের মতো অবরোধ প্রত্যাহার করে রংপুর চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ও আখচাষি নেতারা জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের যৌথ সভা হবে। সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।