জগন্নাথপুরে ‘ধর্মভাই’য়ের শিশুসন্তান অপহরণ, নান্দাইল থেকে উদ্ধার

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ‘ধর্মভাই’ সম্পর্ক স্থাপন করে খাতির জমিয়ে শিশু (৫) অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। শিশুটির মা–বাবা ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে করোনার টিকা নিতে গিয়েছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এই সুযোগে কথিত ধর্মভাই ওই দম্পতির পাঁচ বছরের শিশুসন্তান আবু সুফিয়ানকে অপহরণ করেন। পরে মুঠোফোনে শিশুর বাবার কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার উপজেলার সুবিদপুর গ্রামে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা কুতুবউদ্দিন (৫০) ওই দিনই থানায় কথিত ওই ধর্মভাই জেনার মিয়াকে (৪৫) আসামি করে অপহরণের মামলা করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পরে সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

জেনার মিয়া আমাকে ধর্মভাই ডাকে। পরিবারে তার কেউ নেই শুনে তাকে মায়া করে আমার বাড়িতে থাকতে দিই। মঙ্গলবার স্ত্রীকে নিয়ে করোনার টিকা দিয়ে বাড়িতে এসে দেখি, আমার ছেলে ও ধর্মভাই বাড়িতে নেই। পরে জেনার মিয়া ফোন করে আমার কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে থানায় অভিযোগ করি।
কুতুবউদ্দিন, শিশুটির বাবা

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার মৃত আবদুল আজিজের ছেলে জেনার মিয়া এক বছর আগে সুবিদপুর গ্রামের কুতুবউদ্দিনকে ধর্মভাই বানান। এই সম্পর্কের সূত্রে ধরে গত কয়েক মাস জেনার মিয়া কুতুবউদ্দিনের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। মঙ্গলবার কুতুবউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী জেনার মিয়াকে বাড়িতে রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার টিকা নিতে যান। এ সুযোগে কুতুবউদ্দিনের শিশুপুত্র আবু সুফিয়ানকে জেনার মিয়া বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে মুঠোফোনে কুতুবউদ্দিনের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি।

শিশুটির বাবা কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘জেনার মিয়া আমাকে ধর্মভাই ডাকে। পরিবারে তার কেউ নেই শুনে তাকে মায়া করে আমার বাড়িতে থাকতে দিই। মঙ্গলবার স্ত্রীকে নিয়ে করোনার টিকা দিয়ে বাড়িতে এসে দেখি, আমার ছেলে ও ধর্মভাই বাড়িতে নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ছেলেকে পাই না। পরে জেনার মিয়া ফোন করে আমার কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে থানায় অভিযোগ করি।’

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অপহৃত শিশুর বাবার অভিযোগের পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে আদালতের মাধ্যমে আজ তাঁর বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।