জগন্নাথপুরে ফসল রক্ষার সেই বাঁধে তৃতীয় দফায় ফাটল, মেরামত করলেন গ্রামবাসী
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে তৃতীয় দফায় ফাটল দেখা দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গোড়ারগাঁও গ্রামের এ বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিলে কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে গোড়ারগাঁও জামে মসজিদের মাইকে বেড়িবাঁধ রক্ষার আহ্বান জানালে আশপাশের গ্রামের লোকজন ছুটে আসেন। সাহ্রি খাওয়ার আগপর্যন্ত স্বেচ্ছায় কাজ করে বাঁধ রক্ষা করেন তাঁরা।
এর আগেও ৪ ও ৬ এপ্রিল এই বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তখনো রাত জেগে স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি মেরামত করেছিলেন। অভিযোগ আছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বেড়িবাঁধটি টেকসই করতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গোড়ারগাঁও গ্রামের পাশে গোড়ারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের হাওরের এই ফসল রক্ষা বাঁধের অবস্থান। গতকাল রাতে বাঁধে ফাটল দেখা দিলে কৃষকেরা ফসল রক্ষায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর আশপাশের কয়েকগ্রামের লোকজন বাঁধ রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন।
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও নাদামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজাদ মিয়া বলেন, এর আগে পরপর দুবার ওই বেড়িবাঁধ ধসের ঘটনা ঘটে। কৃষকেরা স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেদের অর্থ ব্যয়ে বাঁধ রক্ষা করেছেন। পাউবো বাঁধটি টেকসই করতে কোনো ভূমিকা রাখেনি।
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইজলা গ্রামের বাসিন্দা সাদিক মিয়া বলেন, ‘কৃষকেরা সারা রাত কাজ করে বাঁধের ফাটল বন্ধ করে বাঁধটি টেকসই করেন। আমি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পাউবোর লোকজন তাঁদের সঙ্গে কাজ পর্যবেক্ষণে সহযোগিতায় ছিলাম।’
পাউবোর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অর্জুন দাশ বলেন, সাতটি স্থানে বাঁধ নির্মাণের জন্য মাত্র তিন লাখ টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। শুধু ওই স্থানেই বারবার ধসের ঘটনা ঘটে।
পাউবো জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার মাঠ কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, গোড়ারগাঁও ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ ফাটলের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যান তিনি। সবার সহযোগিতায় বাঁধটি রক্ষা করা গেছে।
জগন্নাথপুর ইউএনও সাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বাঁধের ফাটল বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাঁধ রক্ষায় এই এলাকার মানুষের সংগ্রাম প্রশংসনীয়।