জগন্নাথপুরে বোরো বীজতলায় বাদামি গাছফড়িংয়ের হানা

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বোরো ধানের বীজতলা বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি নলুয়ার হাওর এলাকায়।
প্রথম আলো।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বোরো বীজতলায় বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এসব পোকা চারাগাছের গোড়ার রস চুষে খেয়ে ফেলছে। এতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলায় এবারই প্রথম এ ধরনের পোকার আক্রমণের ঘটনা ঘটল।

উপজেলার কয়েকজন কৃষক ও কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এ উপজেলার প্রধান ফসল বোরো ধান। এবার ২০ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সে লক্ষ্যে ৯৬৫ হেক্টর বীজতলা তৈরি করা হয়। এসব বীজতলায় সম্প্রতি বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

নলুয়া নোওয়াগাঁও গ্রামের কৃষক আল আমীন বলেন, বোরো আবাদের জন্য দুই কেদার জমিতে বীজতলা তৈরি করেন। বাদামি ফড়িং পুরো চারার রস খেয়ে ফেলছে। ফলে চারাগুলো শুকিয়ে মরে যায়।

রানীগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনাকান্দি গ্রামের কৃষক রাখাল দাশ বলেন, ছয় কেদার জমির বোরো চারা তৈরি করেছিলেন। অধিকাংশ চারা পোকায় খেয়ে ফেলছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো সুফল মিলছে না।

কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রথমবার এ পোকা আক্রমণ করায় কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন বীজতলা রক্ষায়। কৃষকদের সচেতন করতে উঠান বৈঠক, মাইকিং ও মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ১৫টি স্প্রে মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন, হাওরের কৃষকেরা চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন। তিনি কৃষি বিভাগে যোগাযোগ করছেন। তাঁরা বিভিন্ন পরামর্শ দিলেও মাঠে তা কার্যকর হচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, এ ধরনের পোকার আক্রমণ এলাকায় আগে দেখা যায়নি। পোকাটি দ্রুত বংশবিস্তার করে, তাই দুশ্চিন্তা বেশি। উঠান বৈঠক ও মাইকিং করে কৃষকদের শক্তিশালী কীটনাশক ব্যবহারে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আশা করছেন, কয়েক দিনের মধ্যে পোকার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আসবে।