জঙ্গল থেকে পিকআপ জব্দ, চালক–মালিককে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ

কক্সবাজার জেলার মানচিত্র

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার জঙ্গল থেকে একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডুলাহাজারা এলাকার একটি জঙ্গল থেকে পিকআপটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, উদ্ধার পিকআপের চাপায় পাঁচ ভাই নিহত হয়েছেন।

চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক শেফায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জঙ্গল থেকে উদ্ধার পিকআপের চালক ও মালিককে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ওই পিকআপের চালক ও মালিককে আটক করা গেলে ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জব্দ পিকআপ ভ্যানে দুই বস্তা আলু পাওয়া গেছে। সম্ভবত তরকারি বোঝাই করে পিকআপ ভ্যানটি কক্সবাজারের দিকে যাওয়ার সময় মালুমঘাট এলাকায় ৯ ভাইবোনকে চাপা দেয়।

এ ঘটনায় গতকাল রাতে চকরিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছে হাইওয়ে পুলিশ।

গত ৩০ জানুয়ারি উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের হাসিনাপাড়া গ্রামের সুরেশ চন্দ্র মারা গেছেন। সুরেশের মৃত্যুর পর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য সুরেশের সাত ছেলে ও দুই মেয়ে গতকাল ভোরে স্থানীয় একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি পিকআপ ভ্যান তাঁদের চাপা দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলে চার ভাই নিহত হন। পরে ওই দিন বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেক ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন

দুর্ঘটনায় আহত দুই ভাই ও এক বোন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা আরেক বোন মুন্নী সুশীল অক্ষত ছিলেন। মুন্নী সুশীল দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেছিলেন, দুর্ঘটনার পর পিকআপের চালক গাড়ি চালিয়ে কয়েক ফুট সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে অবস্থা বেগতিক দেখে গাড়িটি পুনরায় পেছনের দিকে এসে রাস্তায় পড়ে থাকা আটজনকে আবার চাপা দিয়ে কক্সবাজারের দিকে পালিয়ে যায়।

জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক শেফায়েত হোসেন বলেন, পিকআপটি ৯ ভাইবোনকে চাপা দেওয়ার পর কিছুক্ষণ থেমেছিল বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। কিন্তু প্রথম চাপা দেওয়ার পর পিকআপটি পুনরায় পেছনে এসে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ওপর দ্বিতীয়বার চাপা দেওয়ার প্রমাণ মিলছে না। কারণ, ওই সময় সড়কে লোকজন ছিল না। ওই পিকআপের চালক ও মালিককে আটক করা গেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে—এটা দুর্ঘটনা না হত্যাকাণ্ড।

আরও পড়ুন

এদিকে দুর্ঘটনায় আহত তিনজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মুন্নী সুশীলের স্বামী খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসাধীন রক্তিম সুশীলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ১০ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরও তাঁর তেমন উন্নতি হয়নি। আজ সকালে তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে হাসপাতাল থেকে রাতে বাড়িতে ফিরে আসা প্লাবন সুশীল আজ সকালে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে স্থানীয় মালুমঘাট খ্রিষ্টান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারছেন না। সম্ভবত পাঁচভাইয়ের মৃত্যু শোক সইতে পারেননি তিনি।