জনপ্রতিনিধিদের বলে হয়নি, সাঁকো হচ্ছে স্বেচ্ছাশ্রমে

ঘাঘট নদে এক মাস ধরে সাঁকো তৈরির কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ বাঁশ, গাছ, কাঠ, রশি, নগদ টাকা দিচ্ছেন।

স্থানীয়দের চেষ্টায় নির্মাণাধীন সাঁকো। গত বৃহস্পতিবার সাদুল্লাপুরের দামোদরপুর ইউনিয়নে ঘাঘট নদে
ছবি: প্রথম আলো

এপারে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়ন। ওপারে একই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়ন। মাঝে ঘাঘট নদ। ইউনিয়ন দুটির মধ্যে যোগাযোগের ভরসা একটি ছোট নৌকা। স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে নদের ওপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণের কাজ শুরু করেন এলাকাবাসী। কিন্তু আর্থিক সংকটে সে কাজও এগোচ্ছে না।

গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে দামোদরপুর ইউনিয়নের চান্দের বাজার। বাজারের পাশেই ঘাঘট নদ। উভয় পাশে কাঁচা সড়ক। নৌকা ছাড়া এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যাতায়াতের কোনো উপায় নেই।

ছোট নৌকায় চার-পাঁচজনের বেশি যাত্রী নেওয়া যায় না। জনপ্রতি পাঁচ টাকায় লোক পারাপার করা হয়। মোটরসাইকেল ও রিকশা পারাপারের সুযোগ নেই। ফলে দুই ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নদ পারাপারে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

নদে সাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তা দামোদরপুর ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া গ্রামের জেলাল প্রামাণিক (৪৫) বলেন, ‘ভোটের আগোত নেতারা আসি কয়, হামাক ভোটটা দ্যান। ভোটোত হলে বিরিজ বানে দেমো। ভোটোত জিতলে তামারঘরে দেকা পাওয়ান যায় না। তাই হামরা নিজেরা সাঁকো বানব্যার নাগচি।’

নদে এক মাস ধরে সাঁকো তৈরির কাজ চলছে। কেউ বাঁশ, কেউ গাছ, কাঠ, রশি, নগদ টাকা দিচ্ছেন। যাঁরা আর্থিক সহায়তা দিতে পারছেন না, তাঁরা স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন। এ জন্য গঠিত হয়েছে চান্দের বাজার সাঁকো বাস্তবায়ন কমিটি।

কমিটির সভাপতি ও দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ছইম উদ্দিন বলেন, অনেকবার জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ইতিবাচক কিছু হয়নি। তাই নিজেরাই সাঁকো তৈরির উদ্যোগ নেন। বর্তমানে পাটাতন তৈরির কাজ চলছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। কাজ শেষ করতে আরও তিন লাখ টাকা প্রয়োজন।