জবানবন্দি দেননি বরখাস্ত কনস্টেবল টিটু, দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান আহমদ নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্য টিটু চন্দ্র দাসকে রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ বুধবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকেআনিস মাহমুদ

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. রায়হান আহমদ (৩৪) নিহতের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে দুই দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা দেড়টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে টিটুকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। এরপর তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। টিটু দুই দফা রিমান্ডে কী বলেছেন, এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন কি না, এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ২০ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। এরপর প্রথম দফায় তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। এই পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গত রোববার টিটুকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দ্বিতীয় দফায় আবার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। সব মিলিয়ে আট দিনের রিমান্ডে ছিলেন টিটু।

আরও পড়ুন

এ ছাড়া টিটুর পর গ্রেপ্তার বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল হারুন অর রশিদও পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার সাইদুর শেখ নামের আরেক ব্যক্তি কারাগারে আছেন। সাইদুর শেখ ১০ অক্টোবর রাতে ফাঁড়িতে গিয়ে রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছিলেন।

সিলেট নগরীর আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরদিন রায়হান মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা হলে নগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেন।

আরও পড়ুন

নগর পুলিশ সূত্র জানায়, আকবরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে পুলিশের সদর দপ্তরের তিন সদস্যের একটি কমিটি। আকবরকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ফাঁড়ির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড (টুআইসি) পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিনকে ২১ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আকবর পালিয়ে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে সরানো হয় পুলিশ কমিশনার পদে থাকা গোলাম কিবরিয়াকে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর স্থলে পুলিশের স্পেশাল প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) ডিআইজি পদে থাকা মো. নিশারুল আরিফকে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিশারুল দায়িত্ব নিয়েছেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন