জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে বড় ভাইয়ের মাথায় আঘাত, অতঃপর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি

এক শতক জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্ব মেটাতে কয়েক দিন আগে ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) অভিযোগ জানান বড় ভাই। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হন ছোট ভাই। দ্বন্দ্বের জের ধরে শুরু হয় বাগ্‌বিতণ্ডা, একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে বড় ভাইয়ের মাথায় আঘাত করেন ছোট ভাই। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্টা মাধবপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মুক্তার হোসেন (৩০)। তিনি খট্টা মাধবপাড়া গ্রামের মৃত সাহেদ উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মুক্তারের স্ত্রী আনজুআরা বেগম (২৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খট্টামাধবপাড়া এলাকার মৃত সাহেদের দুই ছেলে মুক্তার হোসেন (৩০) ও রুহুল আমিন (২৬)। দীর্ঘদিন ধরে মাত্র এক শতাংশ জমি নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ ছিল। কয়েক দিন আগে মুক্তার হোসেন ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে খট্টা মাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ছোট ভাই রুহুল আমিনের কাছে চিঠি আসে। চিঠিতে দুই ভাইকে ইউনিয়ন পরিষদে আসার জন্য বলা হয়।

চিঠি পেয়ে রুহুল আমিন বড় ভাইয়ের ওপরে ক্ষিপ্ত হন। উভয়ের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রুহুল আমিন হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে বড় ভাই মুক্তার হোসেন মাটিতে পড়ে যান। স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন স্ত্রী আনজুআরা বেগম।

রুহুল আমিন তাঁকেও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। পরে এলাকাবাসী এসে তাঁদের আহত অবস্থায় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানেই মুক্তার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

খট্টা মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছার রহমান বলেন, মুক্তার হোসেন ছোট ভাই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে জমি ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে হত্যার হুমকি ও মারধরের অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ভাইয়ের নামে নোটিশ জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে শোনেন যে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনায় বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, জমিসংক্রান্ত জেরে দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বড় ভাই নিহত হয়েছেন। নিহতের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, খট্টা মাধবপাড়া গ্রাম থেকে ভারত সীমান্তের দূরত্ব দুই কিলোমিটার। অভিযুক্ত ছোট ভাই গ্রামের পাশ দিয়ে নদী পার হয়ে সীমান্তের ওপারে পালিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।