জমি নিয়ে ভাই–বোনদের বিরোধ, মেটাতে গিয়ে খুন হলেন মাতবর

প্রতীকী ছবি

পৈতৃক জমিজমা নিয়ে ভাই–বোনদের বিরোধ মেটাতে যাওয়া মো. মফিজুর রহমান (৬৫) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়াপাড়া ব্যাপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মফিজুর রহমান ওই গ্রামের প্রয়াত ফজলে আলীর ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে। শনিবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় লাকসাম থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লাকসামের নোয়াপাড়া ব্যাপারী বাড়ির প্রয়াত সালামত উল্লাহর ছেলে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর ভাই রফিকুল ইসলাম ও তাঁদের বোন ফাতেমা বেগম ও ঝর্ণা বেগমের সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধপূর্ণ ওই জায়গায় বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেলে তাঁদের মধ্যে আবার ঝগড়া হয়।

সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়তে যাওয়া এলাকার মাতবর মো. মফিজুর রহমানকে মীমাংসার জন্য ওই জায়গায় নিয়ে যান ফাতেমা বেগম ও ঝর্ণা বেগম। এ সময় মফিজুর রহমান ওই জায়গা থেকে রফিকুল ও তাঁর বোনদের দেওয়া বেড়া তুলে ফেলতে বলেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতেমা বেগম, তাঁর ছেলে ওমর ফারুক, ফাতেমার বোন ঝর্ণা বেগম, ঝর্ণার ছেলে রুবেল মিয়া ও পারভেজ হোসেন মিলে মফিজুরকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদে সদস্য সাইফুল ইসলাম চৌধুরীসহ গ্রামের লোকজন মফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ঘটনার পরপর স্থানীয় লোকজন ফাতেমা বেগম, ঝর্ণা বেগম, ওমর ফারুক, রুবেল ও পারভেজকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে তাঁদের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শনিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বুজরত আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

বুজরত আলী বলেন, ‘ভাই–বোনদের বিরোধ মেটাতে গিয়ে প্রাণ দিতে হলো আমার ভাইকে। আমি এর বিচার চাই।’