জরুরি বিভাগ চালুর দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ফাইল ছবি

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগ চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। এ দাবিতে আজ সোমবার তাঁরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য চিকিৎসককে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এ সময় তাঁরা তত্ত্বাবধায়কের কক্ষের কম্পিউটার ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাল্টা দাবি, তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে ঢোকার পর তাঁদের হাসপাতালের কর্মচারী দিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে হাসপাতালে জরুরি বিভাগ চালু না করলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।

ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা জানান, ২০১৪-১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে কোনো জরুরি বিভাগ নেই। তিন বছর ধরে জরুরি বিভাগ চালুর দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করে আসছেন। প্রতিবার আন্দোলনেই কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে জরুরি বিভাগ চালু হবে। কিন্তু হয় না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সময় হাতে–কলমে শিখতে না পেরে শিখতে হচ্ছে খাতা-কলমে। এতে চিকিৎসাবিদ্যার অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন। জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার ২২ লাখ মানুষ।

মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সভা আহ্বান করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হবে।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি রফিকুল মেহেদি ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হালদার জানান, তাঁরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে রোববার তাঁরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলামকে অবিলম্বে জরুরি বিভাগ চালুর দাবি জানিয়ে আসেন। আজ সোমবার আবার দাবি জানাতে গেলে তত্ত্বাবধায়ক জানান, জনবল অনুমোদন না হলে জরুরি বিভাগ চালু সম্ভব নয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের একটু উচ্চবাচ্য হলে হাসপাতালের কর্মচারীরা তাঁদের ওপর চড়াও হন। এ সময় নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ তাঁদের লাঞ্ছিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভবনের ভেতরে অবস্থান করেন।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি জরুরি বিভাগ চালুর জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে বারবার লেখালেখি করছেন। কিন্তু চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবলসংকট থাকার কারণে জরুরি বিভাগ চালু করা যাচ্ছে না। আজ ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁর কক্ষে ঢুকে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। কম্পিউটার ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে হাসপাতালের সব কর্মচারীকে ফটকের বাইরে বের করে দিয়ে কলাপসিবল গেট আটকে দেন। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান ও পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শান্ত করেন।

তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সভা আহ্বান করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হবে।