জলাতঙ্কের টিকা নিতে হাসপাতালে ভিড়

গত ছয় মাসে জেলায় চার হাজারের বেশি সংখ্যক মানুষ জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। এক দিনে সর্বোচ্চ ২৮ জনের টিকা নেওয়ার রেকর্ডও আছে।

সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই কুকুরের কামড় খেয়ে টিকা নিতে আসছেন ২০ জনের বেশি মানুষ। হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন জলাতঙ্কের টিকা নেওয়া রোগীর সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে ওঠানামা করে। ১০ জুলাই এক দিনেই হাসপাতালটিতে সর্বোচ্চ ২৮ জন টিকা নিয়েছেন।

হাসপাতালটির পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কুকুরের কামড় খেয়েই ২ হাজার ৬২৮ জন এবং অন্যান্য বন্য প্রাণীর কামড়ে ১ হাজার ৪৮৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুরের কামড় খেয়ে রোগীরা জেনারেল হাসপাতালে আসেন। এ সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ জন। হাসপাতালে টিকা নিতে আসা জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার জিয়া শেখ (৪৪) বলেন, কিছুদিন আগে বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে ডান পায়ে কুকুর কামড় দিলে রক্ত বের হয়। তখন থেকেই ভয়ে ছিলেন। পরে হাসপাতালে এসে টিকা নেন।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদুল ইসলাম বলেন, কুকুর ও বন্য প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের র‍্যাবিশ টিকা বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীকে টিটেনাস, ইআরআইজিসহ কয়েকটি ওষুধ নিয়মিত নিতে হয়। জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত কুকুরের কামড় খেয়ে টিকা না নিলে মানুষেরও জলাতঙ্ক হয়। এ জন্য আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

ফরিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে টিকার কোনো সংকট নেই। তবে প্রতিদিনই রোগীরা টিকা নিচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জহুরুল হক বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতায় কুকুর নিধন করতে না পারা এবং সময়মতো টিকার আওতায় না আনার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

কুকুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, দেশ জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একসময় কুকুর নিধন কর্মসূচি চালাত। কিন্তু আদালতের নির্দেশের কারণে তা আর করা যাচ্ছে না।