জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন
ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনকে ‘চাকরি’ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। তবে তিনি নিয়মিত অফিসে বসবেন এবং ক্যাম্পাসে তাঁর জন্য বরাদ্দ বাসাতেই থাকবেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন রহিমা কানিজ। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালে সুদীপ্ত শাহীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জীবিকা নির্বাহ ভাতা পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ওই আদেশে বলা হয়, গত ১৮ নভেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় তিনটি অভিযোগের ঘটনায় গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাঁকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ১০–এর ক (২) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দাপ্তরিক ওই আদেশে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে আসা মোহাম্মদ শামীম রহমান, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের উপস্থাপিকা এবং একই বছরের ২ ও ৩ ডিসেম্বর আকবর আলী ও আবদুর রাজ্জাকের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এখন পর্যন্ত ৩০টির বেশি অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়েছে। সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর পিটিয়ে নাহিদ হোসেন নামের এক ভ্যানচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পেশায় চায়ের দোকানি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জীবিকার তাগিদে ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে থাকেন নাহিদ।

ওই দিন বন্ধ ক্যাম্পাসে পণ্য পরিবহনের জন্য ভ্যান নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। সন্ধ্যায় পণ্য পরিবহন শেষে বাসায় ফেরার পথে এক নারীর অনুরোধে তাঁকে ভ্যানে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগের সময় নাহিদকে আটক করেন সুদীপ্ত শাহীন। পরে নিরাপত্তা শাখার অফিসকক্ষে নিয়ে পিটিয়ে তাঁর পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আট শতাধিক শিক্ষার্থী অনলাইনে গণস্বাক্ষর করে সুদীপ্ত শাহীনের অপসারণসহ চার দফা দাবি জানান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগের অভিযোগ তদন্তে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ প্রথম আলোকে বলেন, সুদীপ্ত শাহীনকে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সুদীপ্ত নিয়মিত অফিসে বসবেন, তবে ডিউটি করবেন না এবং ক্যাম্পাসে তাঁর জন্য বরাদ্দ বাসাতেই থাকবেন। এ বিষয়ে চূড়ান্ত তদন্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি কাগজপত্র দেখে বলতে পারবেন বলে জানান।