‘জীবনে আর ভোট দিতে আসব না’

বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম সিটির বাসিন্দা মো. রশিদ কুমিল্লায় চাকরি করেন। সিটি নির্বাচন উপলক্ষে তিন দিন আগে চট্টগ্রামে আসেন তিনি। আজ বুধবার সকালে ভোট দিতে কেন্দ্রে যান। তবে নিজের পছন্দমতো স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেননি তিনি। এ আক্ষেপ থেকে মো. রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জীবনে যে কদিন বাঁচব, আর ভোট দিতে আসব না।’

রশিদ নগরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি আজ সকালে বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি কেন্দ্র থেকে বের হন।

কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর রশিদ এক প্রতিবেশীর সঙ্গে ভোট নিয়ে তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা আক্ষেপের সঙ্গে বলতে থাকেন। সেখানেই রশিদের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর।

রশিদ বলেন, ‘আমি কুমিল্লায় চাকরি করি। সিটি নির্বাচন উপলক্ষে তিন দিন আগে চট্টগ্রামে আসি। কিন্তু আজ কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দমতো ভোট দিতে পারলাম না।’

ভোটের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে রশিদ বলেন, ‘কেন্দ্রে যাওয়ার পর কয়েকজন ব্যক্তি আমার কার্ড নিয়ে মেশিনে দেন। আঙুলের চাপ নেন। তারপর নিজেরাই মেশিনের সুইচ টিপে দেন। এরপর আমায় তাঁরা বললেন, “আপনার ভোট হয়ে গেছে।”’

নিজের পছন্দমতো স্বাধীনভাবে ভোট দিতে না পারার দুঃখে রশিদ বলেন, ‘জীবনে যে কদিন বাঁচব, আর ভোট দিতে আসব না।’

রশিদকে ভোট দিতে বাধাদানকারী ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোক বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ফটকে আরও সাতজন ভোটারের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন জানান, তাঁরা নিজেদের পছন্দমতো স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেননি। ভোট দিতে গিয়ে রশিদের মতোই অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের।

স্বাধীনভাবে ভোট দিতে না পারার বিষয়ে ভোটারদের অভিযোগ সম্পর্কে বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, ভোট দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যাঁরা আসছেন, সুন্দরমতো ভোট দিতে পারছেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত তাঁর কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫২টি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আজ ভোট হচ্ছে। সকাল আটটায় ভোট শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত টানা ভোট চলবে।

মোট ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪২৯ টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ভোটে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন পুলিশের নয় হাজার সদস্য।

চট্টগ্রাম সিটির আজকের ভোটে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির শাহাদাত হোসেনের মধ্যে। দুজনই প্রথমবারের মতো মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে, চট্টগ্রামের মানুষ আজকের ভোটে একজন নতুন মেয়র পেতে যাচ্ছেন।