জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম শহীদের তালিকায়

স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে এলডিইডি অর্থায়নে। নির্মাণকাজ শেষ হলেও স্মৃতিস্তম্ভটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি।

হিজলার জোনা মার্কেট এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নামসংবলিত স্মৃতিফলক
ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের হিজলা উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে বেশ কয়েকজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধার নাম শহীদদের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে স্থানীয় জোনা মার্কেট এলাকায় স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলডিইডি) অর্থায়নে। ১০ অক্টোবর নির্মাণকাজ শেষ হলেও স্মৃতিস্তম্ভটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি।

সেখানকার স্মৃতিফলকে ৪০ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, এর মধ্যে ১৬ জনই জীবিত। এ ছাড়া নামের বানান, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্যেও ভুল রয়েছে।

এই ফলকে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ৪ নম্বরে রয়েছে মো. মহিউদ্দিনের (৬৫) নাম। তিনি ভাতাভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা। বরিশালের হিজলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন। পেশায় শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন ২০১৪ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন।

সম্প্রতি তিনি মুঠোফোনে নিজের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিস্মিত হন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন জোনা মার্কেট এলাকায় শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে তাঁরও নাম রয়েছে। এটা দেখেই পরিচিত ও স্বজনদের অনেকে মো. মহিউদ্দিনকে ফোন করেন।

শুধু মহিউদ্দিন একা নন, আরও বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শহীদ হিসেবে ওই স্মৃতিফলকে নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদের ছেলে আবদুস সাত্তার ১৫ দিন আগে ওই নামফলকের কথা জানান। পরদিন সকালে জোনা মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখি শহীদদের নামের তালিকাসহকারে যে স্মৃতিফলক লাগানো হয়েছে, তাতে আমার নাম রয়েছে ৪ নম্বরে। ফলকে শহীদ হিসেবে গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম স্থান পেয়েছে। তবে আমার ভুল না হলে ওই তালিকায় ৪০ জনের মধ্যে ১৬ জনই জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে।’

হিজলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন তালুকদার বলেন, এ ধরনের ভুল তথ্য উপস্থাপনের বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

হিজলা উপজেলা প্রকৌশলী সুখদেব বিশ্বাস গতকাল শুক্রবার দুপুরে বলেন, ‘এখানে আমি মাসখানেক আগে যোগদান করেছি। কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমাকে ফোন করে স্মৃতিফলকে ভুলের বিষয়টি জানিয়েছেন। এটি ভুলবশত হয়েছে। শিগগিরই এটা সংশোধন করে দেওয়া হবে।’