জুড়িতে কোভিডে মৃত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তি (৫০) মারা যান। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত হন ‘ইকরামুল মুসলিমিন, মৌলভীবাজার’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের চার মুসলিম সদস্য। 

মৃত ব্যক্তির বাড়ি উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে। আজ শুক্রবার পারিবারিক শ্মশানঘাটে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

উপজেলায় করোনায় এটি দ্বিতীয় মৃত্যু। এর আগে গত ২৬ মে গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের এক যুবক (৩৬) কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফুলতলার ওই বাসিন্দা সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন। ১৪ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তিনি নমুনা দেন। ওই দিনই তা পরীক্ষার জন্য সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরদিন ১৫ জুলাই ফলাফল ‘পজিটিভ’ আসে। এদিকে ওই ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলা সদরে ছেলের বাসায় বেড়াতে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তিনি সেখানে মারা যান। এরপর তাঁর লাশ নিয়ে স্বজনেরা বাড়িতে ফেরেন।
খবর পেয়ে ‘ইকরামুল মুসলিমিন’ সংগঠনের সদস্যরা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে আগ্রহের কথা জানান। কর্মকর্তাদের সম্মতি পেয়ে রাতেই সংগঠনের চার সদস্য ওই ব্যক্তির বাড়িতে চলে যান। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে তা সম্পন্ন হয়। এতে তাঁদের সঙ্গে মৃত ব্যক্তির পরিবারের কয়েকজন সদস্য অংশ নেন।

‘ইকরামুল মুসলিমিন’ সংগঠনের সভাপতি এহসানুল হক আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, ‘সংগঠনে কয়েকজন হিন্দু সদস্য আছেন। তবে রাতে (বৃহস্পতিবার) যোগাযোগ করে তাঁদের ফোন বন্ধ পাই। এরপর আমরা চার মুসলিম সদস্য চলে আসি। মৃত ব্যক্তির ছেলে বলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্য ছাড়া বাইরের কেউ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আসছেন না। আমরা এ ধরনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা বললে তাঁরা সম্মত হন। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিই।’
এহসানুল হক বলেন, এ পর্যন্ত তাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত ১৪ জন ব্যক্তির দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রিয়জ্যোতি ঘোষ বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত উপজেলায় ৭২ জন ব্যক্তি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মারা গেছেন দুজন। ফুলতলায় মৃত ব্যক্তির বাড়ি (অবরুদ্ধ) লকডাউন করা হবে।

উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, ‘ইকরামুল মুসলিমিনের সদস্যরা ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁদের এ কার্যক্রমকে আমরা স্বাগত জানাই।’