জেএমবির সিরিজ বোমা হামলায় ১৭ জনের কারাদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা হয়। সে সময় সাতক্ষীরার পাঁচ জায়গাতেও বোমা হামলা হয়। ১৬ বছর পর এসব মামলার ১৯ জন আসামির মধ্যে ১৭ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ জনের মধ্যে ৮ জনকে ১৩ বছর করে ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একজন খালাস পেয়েছেন। অন্যজন মারা গেছেন।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম এ রায় দেন।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পিপি আব্দুস সামাদ জানান, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়ে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানো হয়। ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলির বাঁকাল এলাকার নাসিরুদ্দিন দফাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৫ সালে পাঁচটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। এসব মামলায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানান তাঁরা। পরে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

গ্রেপ্তার মনোয়ার হোসেন ২০১১ সালের জুনে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যান। গ্রেপ্তার হওয়া সব আসামিই সাতক্ষীরার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত রোগে সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান।

আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাঁদের এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ১৩ মার্চ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এসব মামলায় ১৯ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৭ সালে দায়েরকৃত মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে এসব মামলার বিচারকাজ শুরু করেন।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানান, সকালে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মাহাবুবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিন, বিল্লাল হোসেন, হাবিবুর রহমান, মনিরুজ্জামান, সাইফুল ওরফে আসাদুজ্জামান, হাজারী ওরফে সাঈদ, খালিদ হোসেন, শামীম হোসেন, ওবায়দুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আহাদ, আশরাফ আলী ও মামুনকে হাজির করা হয়। এ ছাড়া জামিনে থাকা সাতক্ষীরা সদরের খড়িবিলার মমতাজ উদ্দিন ও আশাশুনির কুল্লার নূর আলী মেম্বারও আদালতে হাজির হন।

এ মামলার আসামি সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, সাতক্ষীরা সদরের সাতানির আবুল খায়ের, কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন পলাতক।