জেলা প্রশাসন রাস্তা কাটে, কাউন্সিলর ভরাট করেন

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নদীর মাঝে রাস্তা করার অভিযোগ উঠেছে।

বালুবাহী ট্রাক যাতায়াতের জন্য পদ্মা নদীর মধ্যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে রাজশাহীর তালাইমাড়ী বালুঘাট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে পদ্মা নদীর ভেতর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে বালু তুলছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তাটি কেটে দেওয়া হয়। এরপর সে রাস্তা ভরাট করে আবার বালু তুলছেন কাউন্সিলর। কাউন্সিলরের দাবি, আদালতে রিট করে তিনি বালু তুলছেন। আর জেলা প্রশাসক বলছেন, কাউন্সিলর মানুষকে আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।

ওই কাউন্সিলরের নাম রজব আলী। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। রাজশাহীর দিয়াড়খিদিরপুর ও চরশ্যামপুর বালুমহাল ইজারা নিয়ে তালাইমারী এলাকায় পদ্মা নদীর ভেতর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে বালু তুলছেন তিনি। পরিবেশবাদীরা বলছেন, নদীর জায়গায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা দেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।

গত বছরের মতো এবারও রাজশাহী নগরের তালাইমারী ঘাট থেকে খানিকটা দূরে পদ্মা নদীর চর পড়েছে। ওই চরের দক্ষিণে নদীর মূল ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। নদীপথে নৌকায় করে বালু নিয়ে এসে চরে ফেলা হচ্ছে। পরে সেখান থেকে নদীর মধ্যে তৈরি রাস্তায় ট্রাকে করে বালু তালাইমারী ঘাটে নেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এর আগে রাস্তা তৈরি করার সময়ই রাজশাহী জেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। আবার ওই পথে বালু আনা–নেওয়া হচ্ছে শুনে বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার সেখানকার স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পরই রাস্তা ঠিক করে আবার বালু পরিবহন শুরু হয়।

কাউন্সিলর রজব আলী বলেন, চৌহদ্দি থেকে বালু তুলে তালাইমারী ঘাটে নিয়ে আসার জন্য তাঁরা একটা রাস্তা তৈরি করছেন। সেখানে এখন নদী নেই। ওই জায়গাটিও আরএস রেকর্ডে রাস্তা হিসেবেই উল্লেখ আছে। সুতরাং তিনি কোনো অনিয়ম করছেন না। অথচ জেলা প্রশাসন রাস্তা কেটে দিয়ে তাঁকে বালু তুলতে দিচ্ছে না।

রজব আলী বলেন, জেলা প্রশাসন তাঁকে নোটিশ দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতে রিট করেছেন। জেলা প্রশাসনের নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত জেলা প্রশাসককে কারণ দর্শাতে বলেছেন। একই সঙ্গে রিটের শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই রাস্তায় বালু আনা-নেওয়া করতে পারবেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, ইজারাদার আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বালু তুলছেন। আদালত তাঁকে ওই রাস্তায় বালু পরিবহনের অনুমতি দেননি। আদালতের নোটিশের উত্তর দিতে প্রস্তুত আছেন তিনি।