জোর করে বিয়ে দেওয়ার মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান-সাংবাদিকসহ কারাগারে ৯

কারাগার
প্রতীকী ছবি

জোর করে এক যুবককে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ নয়জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলায় জামিন নিতে আসামিরা আদালতে হাজির হলে ঠাকুরগাঁওয়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফুর রহমান তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আবদুল কাদের, ছোট পলাশবাড়ী এলাকার রিতা আক্তার, রিতার চাচা বাবুল হোসেন, ফুফা মুসলিম উদ্দীন, বিয়ের সাক্ষী দৈনিক নয়া দিগন্তের বালিয়াডাঙ্গী প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় বাসিন্দা মো. আনছারুল, দারাসতুল্লাহ মুন্সি ও সারওয়াল হোসেন।

মামলার বরাত দিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, ২০১৯ সালের ৯ মে মামলার বাদী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল এলাকার মিজানুর রহমানকে রাস্তা থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মিজানুরকে মারধর করে জোর করে রিতা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি করান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালামসহ অন্যরা। কাজি আবদুল কাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে এনে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকার দেনমোহর করে মিজানুর-রিতার বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। পরে মিজানুর রহমানকে স্থানীয় বাবুল হোসেনের বাড়ির একটি ঘরে তিন দিন আটকে রাখা হয়।

এ ঘটনায় একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁওয়ের আমলি আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে তৎকালীন বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসাব্বেরুল হক ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, স্থানীয় সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবেদুর রহমান বলেন, মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ মামলার আসামিরা জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন বলেই আজ জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত জামিন না দিয়ে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, স্বেচ্ছায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে রিতাকে বিয়ে করেছেন মিজানুর। জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়নি। এরপরও জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মিজানুর মামলা করেছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘রিতার আগেও বিয়ে হয়েছিল। ষড়যন্ত্র করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে মারধর করে রিতার সঙ্গে আমাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি।’