জোড় তারিখে সবুজ, বিজোড় তারিখে লাল ইজিবাইক

পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাসের দ্বিতীয় দিন জামালপুর পৌর শহরে চলেছে সবুজ রঙের ইজিবাইক। গেটপাড় এলাকা, জামালপুর, ০২ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুল আজিজ
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাসের দ্বিতীয় দিন জামালপুর পৌর শহরে চলেছে সবুজ রঙের ইজিবাইক। গেটপাড় এলাকা, জামালপুর, ০২ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুল আজিজ

জামালপুর পৌর শহরে যানজট কমাতে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। শহরে লাল ও সবুজ—এই দুই রঙের ইজিবাইক নামানো হয়েছে। মাসের জোড় তারিখে চলবে সবুজ আর বিজোড় তারিখে চলবে লাল ইজিবাইক। গতকাল রোববার এই পদ্ধতি চালু হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যাত্রী নিয়ে সবুজ রঙের ইজিবাইক চলাচল করছে। যানজটও কমে গেছে আগের চেয়ে। পৌরসভা প্রাঙ্গণে ইজিবাইকগুলোতে এখনো লাল-সবুজ রং করা হচ্ছে।

জামালপুর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, জামালপুর শহরে প্রায় ৮ হাজার ইজিবাইক চলাচল করায় সারা দিন তীব্র যানজট লেগেই থাকত। যানজট রোধে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন নানা উদ্যোগ নিলেও সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির সভায় জোড় দিনে সবুজ ও বিজোড় দিনে লাল রঙের ইজিবাইক চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়। শুরুতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তিন হাজার ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়। দেড় হাজার ইজিবাইকে লাল আর দেড় হাজার ইজিবাইকে করা হয় সবুজ রং। গতকাল রোববার মাসের প্রথম দিনে লাল রঙের ইজিবাইক চলাচল শুরু করে। আজ জোড় তারিখে চলেছে সবুজ রঙের ইজিবাইক।

তবে এক দিন বিরতি দিয়ে ইজিবাইক চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ইজিবাইকের চালকেরা। গতকাল প্রথম দিনেই ইজিবাইকের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাড়া নিয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বিতণ্ডার খবরও পাওয়া গেছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাসের দ্বিতীয় দিন জামালপুর পৌর শহরে চলেছে সবুজ রঙের ইজিবাইক। গেটপাড় এলাকা, জামালপুর, ০২ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুল আজিজ
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাসের দ্বিতীয় দিন জামালপুর পৌর শহরে চলেছে সবুজ রঙের ইজিবাইক। গেটপাড় এলাকা, জামালপুর, ০২ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুল আজিজ

মিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সিফাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিনের যানজট অনেকটাই কমেছে। নতুন সিদ্ধান্ত শুনে ভালো লেগেছে। তবে চালকেরা বেশি ভাড়া চাচ্ছেন। ৫ টাকার ভাড়া চাচ্ছেন ১০ টাকা। এতে করে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছে। রাস্তায় দুর্ভোগ কমলেও যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে।’

বেশি ভাড়া চাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইজিবাইকের চালক রাফিউর রহমান বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। একদিন ঘরে বসে থাকতে হলে আমরা চলব কীভাবে? ইজিবাইকের লাইসেন্স করতে সাড়ে তিন হাজার টাকা লেগেছে। এক দিন বিরতি দিয়ে ইজিবাইক চলবে, এই সিদ্ধান্ত শুনে মালিকও দ্বিগুণ টাকা চাচ্ছেন। আগের ভাড়ায় গাড়ি চালিয়ে এই বাড়তি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা ভাড়া বাড়িয়েছি।’

জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে শহরের যানজট অনেকটাই কমে গেছে। পুরো শহরে কোথাও যানজট নেই। চালকদের দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের বিষয়টি শুনেছি। সে কারণে ইজিবাইক চালকদের উদ্দেশে গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে শহরে মাইকিং করা হয়েছে। ভাড়া বেশি না নেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।’