জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে ব্যবসায়ীদের এক সপ্তাহের সময়সীমা

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নিহত রায়হানের নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে নগরের কোর্টপয়েন্ট এলাাকায় ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেন। নগরের সব দোকানপাট বন্ধ রেখে সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদ এ আয়োজন করেন।প্রথম আলো

সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যুবক রায়হান আহমদের মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এক সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে এ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের একটি গাড়ি বন্দরবাজার এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তা ধাওয়া করেন সভায় উপস্থিত কিছু মানুষ।

গাড়িটি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনারের (প্রসিকিউশন) ছিল বলে জানা গেছে। গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি বা কারও আহত হওয়ার ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সিলেট নগরের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা বন্দর বাজার কালেক্টরেট মসজিদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন। সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদ এই আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পালিয়ে গেছেন। অভিযুক্ত আরও ছয় পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার এবং প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেলেও তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করা না হলেও তাঁরাও পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

মানববন্ধন চলাকালে কোর্টপয়েন্ট এলাকা দিয়ে পুলিশের একটি গাড়ি যাওযার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা তা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়।
প্রথম আলো।

বক্তারা বলেন, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁরা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।

প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালে পৌনে ১১টার দিকে পুলিশের একটি গাড়ি বন্দরবাজার এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তা ধাওয়া করেন সভায় উপস্থিত উত্তেজিত কিছু মানুষ। পরে ব্যবসায়ী নেতারা তাঁদের থামান।

এদিকে প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে পুলিশের গাড়িতে হামলার বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন ব্যবসায়ী নেতারা। তাঁরা বলেন, কিছু মানুষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছেন। বিষয়টিকে রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। তাঁরা দাবি আদায়ে সবাইকে একসঙ্গে এনেছেন। এখানে রাজনীতির কোনো সুযোগ নেই। রায়হান হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানান তাঁরা।

কর্মসূচিতে সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শেখ মকন মিয়া সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বৃহত্তর আখালিয়া সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মখলিছুর রহমান কামরান, বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমির হোসেন, হাসান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রইছ আলী, ব্রহ্মময়ী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান প্রমুখ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, ওই গাড়ি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরীর। তিনি আদালত থেকে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা কারও আহত খবর পাওয়া যায়নি।