জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ গোলাম সারোয়ার আজ বুধবার এই রায় দেন। জয়পুরহাট আদালতের সরকার কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল মামলা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হত্যার ঘটনাটি প্রায় চার বছর আগের। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম বাবুল সরকার (৫০)। তিনি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার তালতলী শফিপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট বছর আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের তমিজ উদ্দিনের মেয়ে তানজিলার সঙ্গে আসামি বাবুল সরকারের বিয়ে হয়। তাঁদের দুইটি ছেলেসন্তান রয়েছে। তানজিলা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি বিয়ের আগে নিজের আয়ে পাঁচবিবি উপজেলার রাধানগর এলাকায় চার শতক জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই বাড়িতে তিনি মাঝেমধ্যে তাঁর পরিবার নিয়ে বেড়াতে যেতেন।

তানজিলা রাধানগরের বাড়িটি বিক্রি করে তাঁর বাবার বাড়ি মালঞ্চা গ্রামে বাড়ি করতে চান। তানজিলার স্বামী বাবুল সরকার তাতে বাদ সাধেন। তিনি বাড়ি বিক্রির টাকা দিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি শফিপুর বাজারে বাড়ি করতে চান। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াবিবাদ হয়।

ঘটনার ২০ দিন আগে তাঁরা রাধানগরের বাড়িতে বেড়াতে যান। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের কথা সেটি; ২২ ডিসেম্বর বিকেল বাবুল সরকার তাঁর সন্তানদের নিয়ে পাঁচবিবি বাজারে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। ওই রাতের কোনো একসময় বাবুল তাঁর স্ত্রী তানজিলাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন।

এ ঘটনার পর স্ত্রীর লাশ রাধানগরের বাড়িতে রেখেই বাবুল তাঁর বাড়ি শফিপুর চলে যান। পরে মুঠোফোনে স্ত্রী মারা গেছেন—এ কথা শ্বশুরবাড়ির মানুষদের জানান। পরদিনই ২৩ ডিসেম্বর তানজিলার বড় বোন মোছা. তৌহিদা বেগম বাদী হয়ে বাবুলকে আসামি করে পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এ মামলায় ২০১৭ সালের ২২ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আজ জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ গোলাম সারোয়ার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।