টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অনুসন্ধান করবে দুদক

হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে সেবা ফির প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

নড়াইল সদর হাসপাতালের সেবা ফির প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অনুসন্ধান করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। শিগগিরই প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে মাঠে নামবেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। দুদকের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য আগামী রোববার প্রধান কার্যালয়ে আবেদন জানানো হবে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।’

সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহানারা খানমের (লাকি) বিরুদ্ধে সেবা ফির প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় সূত্র জানায়, সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে হাসপাতালে বিভিন্ন সেবা ফি নেওয়া হয়। এসব ফি সোনালী ব্যাংকের চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়। সদর হাসপাতালের এসব ফির টাকা নড়াইল সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা হওয়ার কথা। এ বাবদ ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। কিন্তু টাকা জমার জাল চালান কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় হিসাবরক্ষক জাহানারা খানমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার তাঁকে সেবা ফি গ্রহণের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় ‘নড়াইল সদর হাসপাতাল: সেবা ফির টাকা নয়ছয়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় হাসপাতালে গিয়ে খোঁজখবর নেন। এদিকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকের ভাষ্য, শুধু হিসাবরক্ষকের পক্ষে এত বড় জালিয়াতি করা সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন।

এ বিষয়ে হিসাবরক্ষক জাহানারা খানম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক হাতে তালি বাজে না। এর চেয়ে বেশি এখন কিছু বলব না।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুস শাকুর বলেন, ‘হিসাবরক্ষক টাকা জমা দেওয়ার জাল চালান তৈরি করে অফিসে সংরক্ষণ করেছেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে ব্যাংকে গিয়ে যাচাই করে এর সত্যতা পাওয়া যায়। এটি জমা দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর। আমার কাছ থেকে জমা দেওয়ার আগে চালানে শুধু স্বাক্ষর নিয়ে নেন তিনি।’