টাকার লেনদেন নিয়ে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

হত্যা
প্রতীকী ছবি

টাকার লেনদেন নিয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণচড়া গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল হালিম (৫৪)। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার পাইকের বাজারের সমস উদ্দিনের ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে শাহিনুর ইসলাম (২৩) বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সকালে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা করেছেন। লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণচড়া গ্রামের মজিবর রহমানকে (৪৫) ওই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রংপুরের হারাগাছ পৌর এলাকার দরজিপাড়ার চান মিয়া ব্যবসার সূত্রে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণচড়া গ্রামের মজিবর রহমানের কাছে দেড় লাখ টাকা পাবেন। এক বছর চলে গেলেও পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় দুই মাস আগে আবদুল হালিম মাতবর ও মোনায়েম পাওনাদার চান মিয়ার পক্ষে সালিস বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি মজিবর রহমান পাওনাদার চান মিয়াকে পাওনা দেড় লাখ টাকা দিবেন। কিন্তু সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মজিবর রহমান পাওনাদার চান মিয়াকে নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধ করেননি।

হরিণচড়া গ্রামে গেলে মজিবর রহমানের লোকজন আবদুল হালিম , মোনায়েম ও চান মিয়ার ওপর হামলা চালান। এ সময় চান মিয়া ও মোনায়েম পালিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।

মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাওনা দেড় লাখ পরিশোধ করার কথা বলে মজিবর রহমানের পক্ষ থেকে আবদুল হালিম, মোনায়েম হাজি ও পাওনাদার চান মিয়াকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার টাংরিরবাজারে আসতে বলা হয়। সেখানে উভয় পক্ষ উপস্থিত হলে টাকা পরিশোধ করা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে মজিবর রহমান ও তাঁর লোকজন আবদুল হালিমের মোটরসাইকেলটি জোর করে কেড়ে নিয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণচড়া গ্রামের ফজলুর বাড়িতে চলে আসেন।

হরিণচড়া গ্রামে গেলে মজিবর রহমানের লোকজন আবদুল হালিম , মোনায়েম ও চান মিয়ার ওপর হামলা চালান। এ সময় চান মিয়া ও মোনায়েম পালিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।

সংবাদ পেয়ে গতকাল রাতে আবদুল হালিমের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে। তাঁরা এলাকাবাসীর সহায়তায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে হারাগাছ ৩১ শয্যার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় গতকাল সকালে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

রংপুরের হারাগাছ থানা সূত্রে জানা যায়, রাতে লালমনিরহাট ও হারাগাছ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আবদুল হালিমের লাশ গতকাল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির বাড়ি হারাগাছে হওয়ায় ঘটনাটি আমরা খতিয়ে দেখছি।’