টানা সপ্তমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়লেন তিনি

মজিবুর রহমান হাওলাদার
ছবি: সংগৃহীত

টানা সপ্তমবারের মতো মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়েছেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। গত রোববার অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তিনি টেবিল ফ্যান প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৯০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মজিবুর রহমান হাওলাদার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক।

ভোটার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৩৪ বছর ধরে শিরখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মজিবুর রহমান। আগেরবার ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তিনি। তবে এবার মাদারীপুর সদরের ১৪টি ইউপিতে দলীয় প্রতীক না থাকায় মজিবুরকে হারাতে পাঁচ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। শেষ পর্যন্ত পাঁচ প্রার্থীকেই পেছনে ফেলে এবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. সালাম হাওলাদার অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৪৮৯ ভোট।

মাদারীপুর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ভেতরে শিরখাড়া ইউনিয়ন। জেলা সদর থেকে যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় একসময় এ ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা ছিল চরমপন্থীদের দখলে। ১৯৮৮ সালে প্রথম চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সার্বিক উন্নয়নমূলক কাজ করেন মজিবুর রহমান হাওলাদার। বর্তমানে শিরখাড়া এলাকা প্রায় চরমপন্থীশূন্য। উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।

শিরখাড়া এলাকার বাসিন্দা আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মজিবুর ভাই আসলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন আদর্শের সৈনিক। আমরা কখনো তাঁকে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করতে দেখিনি। এলাকার জনগণের বিপদে-আপদে, আনন্দ-উল্লাসে সব সময় মজিবুর ভাই ছিলেন। তাই এলাকার মানুষ তাঁকে বারবার নির্বাচিত করছেন। এবারও তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। আমরা একজন জনদরদি জনপ্রতিনিধি পেলাম।’

টানা সাতবারের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। যুদ্ধ শেষে আমি চিন্তা করি, এলাকার মানুষকে রেখে আমি কোথাও যাব না। এরপর ১৯৮৮ সালে প্রথম চেয়ারম্যানে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত হই। প্রায় ৩৪ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করে আসছি। কখনো জিততে হবে, এমন চিন্তা করিনি। মানুষের সেবা করতে হবে, তাঁদের পাশে থাকতে হবে, এটাই ছিল আমার লক্ষ্য। তবে এবার নির্বাচন অন্যবারের চেয়ে ভিন্ন। বিজয় ছিনিয়ে আনা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচজনকে হারিয়ে জয় পাওয়াটা সত্যিই আনন্দের।’