টিকা ফুরিয়ে যাবে শুনে টিকাকেন্দ্রে তিন গুণ বেশি মানুষ, হট্টগোল থামাল পুলিশ
টিকা নেওয়ার জন্য খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছিল ৩০০ মানুষকে। কিন্তু কেন্দ্রে উপস্থিত হন হাজারখানেক মানুষ। শেষ পর্যন্ত হট্টগোল থামাতে পুলিশ ডাকতে হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পাহারায় নির্ধারিত ব্যক্তিদেরই টিকা দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে দুর্গাপুরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জন্য আবেদন করেছিলেন ১০ হাজার ৫০০ জন। সেই টিকা নিয়েছেন ৬ হাজার ৮৯৩ জন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬ জুলাই দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চীনের সিনোফার্মের টিকার নিবন্ধন শুরু হয়। সিনোফার্মের ১ হাজার ৬০০ টিকার বিপরীতে এ পর্যন্ত আবেদন করেছেন উপজেলার ২ হাজার মানুষ। নিবন্ধন অনুযায়ী আজ থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) না পেয়েও টিকাদানের খবর পেয়েই সেখানে হাজারখানেক মানুষ এসে ভিড় জমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় অল্প জায়গায় কয়েক শ মানুষ টিকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় আরও বেড়ে যায়। কে আগে নেবেন, আর কে পরে নেবেন—এই নিয়ে চরম হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। যাঁরা খুদে বার্তা পাননি, তাঁদের বের করে দিয়ে বুথের জটলা কমানো হয়। শেষ পর্যন্ত আজকের মতো টিকাদান কর্মসূচি শেষ করা পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় থাকে।
সিনোফার্মের ১ হাজার ৬০০ টিকার বিপরীতে এ পর্যন্ত আবেদন করেছেন উপজেলার ২ হাজার মানুষ। নিবন্ধন অনুযায়ী আজ থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।
টিকা নিতে এসে ভিড়ের মধ্যে পড়েছিলেন উজানখলশি গ্রামের সাদেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার পর পর্যবেক্ষণ স্থানে মানুষের সংকুলান হচ্ছিল না। নারী-পুরুষ উভয় বুথেই এই সমস্যা হচ্ছিল। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনাও ছিল। অল্প জায়গায় বেশি মানুষ হওয়ার কারণে পরিবেশ খারাপ হয়ে যায়।
দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলাম বলেন, টিকার ডোজ কম পড়ার কথা শুনে লোকজন একসঙ্গে প্রচণ্ড ভিড় করেন। এতে বুথের সামনে জটলার সৃষ্টি হয়। পুলিশ এসে লোকজনকে শান্ত করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা নিতে আহ্বান জানায়। এতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবা খাতুন বলেন, তাঁরা ৩০০ মানুষকে আসার জন্য খুদে বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু টিকাদান শুরু হয়েছে শুনেই প্রায় এক হাজার মানুষ চলে এসেছেন। এতে ঝামেলা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ ডাকতে হয়েছিল। বেলা দুইটার মধ্যে টিকাদান শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আড়াইটার পরে শেষ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, এটা আশার কথা যে টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। পরের দিন থেকে খুদে বার্তা দেখে ভেতরে ঢোকানোর ব্যবস্থা করবেন।