টুর্নামেন্টে হেরে ‘অশালীন আচরণ’, যুবলীগ নেতার বহিষ্কার চেয়ে মাঠে ছাত্রলীগ

লক্ষ্মীপুরে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে পবনের বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ।
ছবি: সংগৃহীত

ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে দল হারায় ‘অশালীন আচরণ ও অতিথিদের অপমানের’ অভিযোগে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রামগঞ্জ পৌর শহরে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম এ ছাত্র সংগঠনের কয়েক শ নেতা–কর্মী।

গতকাল সোমবার একই দাবিতে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছিলেন তাঁরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পৌর কার্যালয়ের সামনে মেয়র ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এতে ‘রামগঞ্জ যুবলীগ’ নামে হাবিবুর রহমানের একটি দল অংশ নেয়। গত রোববার রাতে হাবিবুরের দলের সঙ্গে লামচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দলের সেমিফাইনাল হয়। খেলায় হাবিবুরের দল হেরে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিবুর খেলার মাঠে নেমে অশালীন মন্তব্য করেন। তখন সেখানে হট্টগোল তৈরি হয়। এরপর বসার স্থানে গিয়ে চেয়ার না পেয়ে আবার গালমন্দ শুরু করেন তিনি। এ সময় অতিথি, খেলোয়াড় ও দর্শকেরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর স্ত্রী দিলরুবা শামীম প্রথম আলোকে বলেন, অশালীন কথা বা হট্টগোল সৃষ্টির অভিযোগ সঠিক নয়। অতিথিদেরও অপমান করে কথা বলেননি তিনি। ওই অনুষ্ঠানে হাবিবুরও অতিথি ছিলেন। তিনি অনুষ্ঠানে গিয়ে শুধু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলেন পাশের চেয়ারে বসার জন্য। এতে ওসি ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান।
ওসি এমদাদুল হক বলেন, ‘খেলার আয়োজন করেছেন পৌরসভার মেয়র। আমার জন্য চেয়ার রাখার দায়িত্ব তাঁদের। কিন্তু তিনি (হাবিবুর রহমান) আমাকে চেয়ার ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন।’

রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে এ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বেলাল আহমেদ, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর কামরুল হাসান ফয়সাল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউজ্জামানসহ দুই শতাধিক নেতা-কর্মী।

এর আগে ‘মাইন্ড ইট, নৌকার ভোট ওপেন হইতে হবে’ বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন হাবিবুর রহমান। গত ৭ নভেম্বর রামগঞ্জ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনের আগে যুবলীগের এ নেতা বলেছিলেন, ‘মাইন্ড ইট (মনে রাখবেন), নৌকার ভোট ওপেন (উন্মুক্ত) হইতে হবে। মেম্বারি (ইউপি সদস্য) যেই করেন, গোপনে আপনাদের কেউ ভোট দিক এটাতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করবেন না। কিন্তু নৌকাকে ওপেন রাইখা করতে হবে। এর বাহিরে কোনো কথা নেই।’