টেকনাফে রোহিঙ্গাদের ঘরে দুর্বৃত্তের আগুন লাগানোর অভিযোগ

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে ২২ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের একটি ঘরে এক দুর্বৃত্ত আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে খবর পেয়ে এপিবিএনের সদস্যরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে ঘরের আংশিক পুড়ে গেলেও বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কমান্ডিং কর্মকর্তা অধিনায়ক তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২২ নম্বর উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বি-৫ ব্লকের ১৭২৭ নম্বর ঘরের বাসিন্দা আসু জামানের (২১) ঘরের ছাউনিতে আগুন লাগানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে ঘরের আংশিক পুড়ে গেলেও বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এপিবিএনের এই কর্মকর্তা বলেন, অপরিচিত একজন ব্যক্তি আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করার পাশাপাশি শিবিরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা শিবিরের দলনেতা (মাঝি) মোহাম্মদ রফিক বলেন, কিছুদিন ধরে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। কয়েক দিন আগে উখিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১ জন রোহিঙ্গা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। গৃহহারা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আগুন আতঙ্ক কাজ করছে। এর নেপথ্যে আসলে কারা রয়েছে, সেটা খুঁজে বের করা খুবই জরুরি।

এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্যাসের চুলা, রান্নাঘর, কয়েল জ্বালানো, বিড়ি-সিগারেটের ব্যবহৃত দেশলাই ও গ্যাসলাইটের আগুন সাবধানে ব্যবহারের করার জন্য সচেতনতামূলক সভা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার হ্নীলার জাদিমোরা শালবাগান ও জাদিমোরা রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের পৃথকভাবে ‘বিট পুলিশিং’ সভা হয়।

১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পরিদর্শক মো. আবুল বাশার মিয়া ও মো. ফরিদ খান, বিট কর্মকর্তা এএসআই পলাশ, এএসআই মোহাম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পৃথক সভায় রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ারসহ ২০০-২৫০ রোহিঙ্গা শরণার্থী উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্প এলাকায় আগুন লাগার গুজব ছড়ানো থেকে নিজেদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া দিন এবং রাতে ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে প্রতি বিটে টহল ও চেকের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এ ছাড়া নয়াপাড়া ও লেদা ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা ধর্মীয় উসকানি, সমসাময়িক আগুন লাগার বিষয়ে এবং মাস্ক পরিধানে সচেতন করার জন্য সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল চারটায় নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মার্কাস মসজিদ প্রাঙ্গণে রোহিঙ্গা চেয়ারম্যান, মাঝিসহ শতাধিক রোহিঙ্গাদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশ সভাটি করেছে।