ঠাকুরগাঁও চিনিকল বাঁচাতে মানববন্ধন

চিনিকল বেসরকারীকরণ নয়, আধুনিকায়নের দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধনপ্রথম আলো

চিনিকল বেসরকারীকরণ নয়, আধুনিকায়নের দাবিতে আজ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন। ঠাকুরগাঁও রোড এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় এ মানববন্ধন করা হয়।

‘শিল্প বাঁচাও, কৃষি ও কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে আয়োজিত মানববন্ধনে জেলা জেএসডির সভাপতি মনসুর আলী, সদর উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আহসানুল হাবিব, চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি জবাইদুর রহমান, আখচাষি আনোয়ার হোসেন, আবু বক্কর সিদ্দিক বাবু, ফয়েজ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে জবাইদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে সরকার দেশের ১০টি চিনিকল বেসরকারীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শ্রমিকদের পাওনাসহ নানা বিষয়ের হিসাব নিচ্ছে সরকার। কিন্তু আমরা চিনিকল বেসরকারীকরণ নয়, আধুনিকায়ন চাই। কারণ, দীর্ঘ দিনের পুরোনো শিল্প চিনিকলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে লাখো শ্রমিক ও হাজারো পরিবার। সরকারের শুধু লোকসানের কথা চিন্তা করলে হবে না, এতগুলো শ্রমিকের জীবনের কথাও ভাবতে হবে। শ্রমিকদের কর্মহীন না করে, এ খাতের আধুনিকায়ন করতে হবে।’

এ শিল্পের সঙ্গে শুধু শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে আছে, এমনটি নয়, কৃষকসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন এর সঙ্গে জড়িত।

জেলা জেএসডির সভাপতি মনসুর আলী বলেন, ঠাকুরগাঁও চিনিকল জেলার একমাত্র প্রাচীন শিল্পকারখানা। এ শিল্পের সঙ্গে শুধু শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে আছে, এমনটি নয়, কৃষকসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন এর সঙ্গে জড়িত। আধুনিকায়নের মাধ্যমে বহুমুখী দ্রব্যাদি উৎপাদনের উপযোগী করে চিনিকলগুলোকে লাভজনক হিসেবে গড়ে তুলতে দ্রুত বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

পরে জেলা বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাহবুব আলম সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো ঠাকুরগাঁও চিনিকল লাভজনক করতে আধুনিকায়ন ও ডিস্টিলারি ইউনিট স্থাপন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন, সুগার বিট প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটির টাকা পরিশোধ, আখচাষিদের টাকা সময়মতো পরিশোধসহ সারা বছর চিনিকল চালু রাখতে সেগুলোকে র সুগার আমদানির অনুমতি দিয়ে পরিশোধন কারখানা স্থাপন।

ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন এ চিনিকলের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা বলতে পারছি না।’

রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধ হবে না। এসব চিনিকলের কোনো শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনাও সরকারের নেই
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন

২৭ সেপ্টেম্বর শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এক অনুষ্ঠানে বলেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধ হবে না।তিনি বলেছেন, সরকারি এসব চিনিকলের কোনও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনাও সরকারের নেই। বরং চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করে এগুলোকে লাভজনক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।