ডাকাত অপবাদ দিয়ে রাতভর দুই কিশোরকে নির্যাতন, একজনের মৃত্যু

নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় গত শুক্রবার রাতে ডাকাত অপবাদ দিয়ে দুই কিশোরকে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আহত এক কিশোর আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে।

ওই ঘটনায় আজ দুপুরে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।

নিহত কিশোরের নাম মো. ইমন মিয়া (১২)। সে কুকুরমারা গ্রামের মৃত কাজল মিয়ার ছেলে। সে পাতিলাধোয়া গ্রামে নানা চান মিয়ার বাড়িতে থেকে নারায়ণপুর বাজারের খাবারের হোটেলে কাজ করত। আহত আরেক কিশোরের নাম মো. মোস্তাকিন (১২)। সে পাতিলাধোয়া গ্রামের মো. হুমায়ুনের ছেলে। সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে ওই দুই কিশোরকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের হাড়ের জোড়ায় জোড়ায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাদের মধ্যে ইমনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আর মোস্তাকিনকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ইমন শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মোস্তাকিনকে নিয়ে নারায়ণপুর বাজার থেকে নানার বাড়ি ফিরছিল। গোবিন্দপুর গ্রামে একদল দুর্বৃত্ত তাদের পথ আটকায়। দুর্বৃত্তরা তাদের কাছ থেকে একটি মুঠোফোন ও ২ হাজার ২০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। দুর্বৃত্তদের চিনে ফেললে তারা ডাকাত অপবাদ দিয়ে ইমন ও মোস্তাকিনের হাত-পা বেঁধে রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করে। এতে ইমন ও মোস্তাকিনের পা ভেঙে যায়। ছিনতাইকারীরা প্লাস দিয়ে ইমনের হাতের আঙুলের নখও উপড়ে ফেলে। এভাবে রাতভর নির্যাতন করা হয়।

আসামিরা পলাতক। গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাঁদের নাম বলা যাচ্ছে না। তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছে।
মো. সাফায়েত হোসেন, ওসি, বেলাব থানা

পরদিন সকালে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে ইমন ও মোস্তাকিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মোস্তাকিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে ইমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে ইমনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ইমনের মামা শাহ আলম মিয়া থানায় মামলা করেন।

শাহ আলম বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলার কারণেই ইমনের ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়। আমি এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

জানতে চাইলে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাফায়েত হোসেন বলেন, আসামিরা পলাতক। গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাঁদের নাম বলা যাচ্ছে না। তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছে।