ডিজিটাল আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক তানভিরের জামিন

ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন সাংবাদিক তানভির।
ছবি: প্রথম আলো

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তারের ২০ ঘণ্টা পর ঠাকুরগাঁওয়ের সাংবাদিক তানভির হাসান ওরফে তানু জামিন পেয়েছেন। আজ বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক আরিফুর রহমান তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

তানভির হাসান অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজ ডট কম, দৈনিক ইত্তেফাক ও বেসরকারি চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক ও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

৫ জুলাই ঠাকুরগাঁও হাসপাতালের করোনা ইউনিটের খাবারের মান নিয়ে তানভির হাসানের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত শুক্রবার ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে সাংবাদিক তানভীর হাসান, নিউজবাংলা ২৪ ডট কমের প্রতিনিধি রহিম শুভ্র ও বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর জেলা প্রতিনিধি আবদুল লতিফের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় গতকাল রাত ৮টার দিকে তানভিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুন তানভিরের করোনা শনাক্ত হয়। গতকাল শনিবার গ্রেপ্তারের পর থানা হাজতে থাকা অবস্থায় তানভীরের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে রাত ১টার দিকে তাঁকে থানা হাজত থেকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে হাতকড়া পরিয়েই রাখা হয়।

তানভির হাসান অভিযোগ করেন, ‘হাসপাতালে ওষুধ কেনা নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য আমার কাছে আছে। সেটা যাতে প্রকাশ করতে না পারি, সে জন্যই আমাকে এ মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।’

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তানভিরকে হাসপাতাল থেকে আদালতের হাজতে আনা হয়। বেলা তিনটার দিকে তাঁকে আদালতে তোলার পর শুনানি শুরু হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ডালিম কুমার রায়। এ সময় আসামি পক্ষে তাঁর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। এরপর আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তানভির হাসানের জামিন মঞ্জুর করেন।

তানভির হাসানের পক্ষে ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল হালিম, ইমরান হোসেন চৌধুরীসহ কয়েকজন। এ বিষয়ে ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকতা মহান পেশা। হাসপাতালের অনিয়মের সংবাদ তুলে ধরে তানভির কোনো অন্যায় করেননি। তা ছাড়া লকডাউন পরিস্থিতির কারণে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় হাসপাতালে খাবার সরবরাহে ব্যত্যয় ঘটেছিল বলে মামলার বাদী নিজেই স্বীকার করেছেন। এরপরও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে মামলাটি করা হয়েছে বলে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি।’

শুনানি শেষে তানভিরের বাবা আবু তাহের বলেন, ‘আমার ছেলে করোনায় আক্রান্ত। আদালত ন্যায়বিচার করেছেন।’