ডিসি দিলেন অর্থ সহায়তা, জমি উদ্ধার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এসপির

দখল করে নেওয়া বসতভিটার পাশে নাতিকে বুকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কল্পনা পাহান। সম্প্রতি হাজরানাটোর গ্রামে
ফাইল ছবি

সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নেওয়া ঋণই যাঁর কাল হয়েছে, সেই কল্পনা পাহানের পাশে দাঁড়িয়েছে নাটোরের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। একই সময়ে পুলিশ সুপার তাঁকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বেদখল হওয়া জমি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নাটোর শহরসংলগ্ন হাজরানাটোর গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কল্পনা পাহানের একমাত্র সম্বল তাঁর বসতভিটা জমি। নিজের নামে এর দলিল থাকলেও মালিকানার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তিনি। সুদের টাকা নেওয়ার সময় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করেছিলেন। এখন ঋণ প্রদানকারী ব্যক্তি কল্পনার জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করেছেন। পরিবার নিয়ে কল্পনা থাকেন অন্যের বাড়িতে।

এ নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল প্রথম আলোতে ‘সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নেওয়া ঋণই কাল হয়েছে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে ঋণদাতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ১৪ এপ্রিল ‘নাটোরে চাঁদাবাজির মামলায় সেই ঋণদাতা গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রথম আলোতে খবর প্রকাশিত হয়। এর জের ধরেই পুলিশ ও প্রশাসন কল্পনা পাহানের পাশে দাঁড়াল।

আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের পক্ষে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দীন-আল-ওয়াদুদ কল্পনা পাহানের হাতে পাঁচ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। জেলা প্রশাসক মো.শাহরিয়াজ বলেন, কৃষি জমিতে খেটে খাওয়া ও প্রতারণামূলক ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়া এই নারীকে তাৎক্ষণিক কিছু সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে আরও সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা তাঁর কার্যালয়ে কল্পনা পাহানকে ডেকে নিয়ে বলেন, ঋণদাতা খুশি বেগম সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে যে জমি দখল করে বাড়ি করেছেন, তা শিগগির উদ্ধার করা হবে। ইতিমধ্যে খুশি বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাঁর তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকাকালে তিনি ঋণ জালিয়াতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ সেগুলো তদন্ত করে দেখছে।