ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী ও ছোট যানের চলাচল বেড়েছে

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পণ্যবাহী যানবাহন ও ছোট যানবাহনের চলাচল বেড়েছে
প্রথম আলো

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ আজ মঙ্গলবার সপ্তম দিন চলছে। ভোর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে ইলিয়টগঞ্জ পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশে পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান) ও ছোট যানবাহনের চলাচল বেড়েছে।

জরুরি কাজে বের হওয়া ঢাকা ও কুমিল্লাগামী সাধারণ যাত্রী, রোগী ও ব্যবসায়ীরা মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান ও রিকশায় গন্তব্যে যাচ্ছেন।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিশ্বরোডের বন্ধু কনফেকশনারির মালিক মনির হোসেন চৌধুরী সকাল নয়টায় বলেন, কঠোর লকডাউনের শুরুতে এবং এর আগে দোকানের বিক্রি ভালো ছিল। প্রতিদিন সাত থেকে নয় হাজার টাকা বিক্রি করা যেত। অথচ লকডাউনের কয়েক দিনে মাত্র চার হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মাস শেষে দোকানভাড়া দিতেই তো মুশকিল হয়ে যাবে।

গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের খেজুর বিক্রেতা সাদেক মিয়া বলেন, বিক্রির আশায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকান খুলে বসে থাকেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না।

দাউদকান্দি পৌর শহরের তুজারভাঙা গ্রামের বাসিন্দা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক হোসেন মিয়া বলেন, ‘লকডাউনের আগে বিশ্বরোড থেকে দাউদকান্দি থানা এলাকা পর্যন্ত সারা দিন চালিয়ে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাওয়া যেত। লকডাউনের মধ্যে পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিনভর ঘুরছি। আয় নেই বললেই চলে।’

দাউদকান্দির চশই গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মকবুল হোসেন সকাল ১০টার দিকে দাউদকান্দি বিশ্বরোডে দাঁড়িয়ে বলেন, ছোট যানবাহন চালু থাকায় ভাড়া একটু বেশি হলেও লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন। এতে জনগণের যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘব হচ্ছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে নাটোর থেকে বাঙ্গি নিয়ে আসা ট্রাকচালক বাবরী মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, লকডাউনের শুরুতে এবং শুরু হওয়ার আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে প্রচণ্ড চাপ ছিল। বর্তমানে পুলিশ সড়কের স্থানে স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে মুভমেন্ট পাস চাইছে। এতে যানবাহন চলাচলের চাপ অনেকটাই কমে গেছে।

দাউদকান্দির তিনচিটা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, কঠোর লকডাউনে হাটের দিন ছাড়া অন্যান্য দিন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গেলে অনেকটাই লুকিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি-চান্দিনা সার্কেল) মো. জুয়েল রানা বলেন, কঠোর লকডাউনে পুলিশ উপজেলার সব সড়ক, বাজার এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাত-দিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।