তথ্য গোপন করে মৃত্যু, স্বাভাবিকভাবে দাফন

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়ার তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। এমনকি দাফনেরও পর তাঁর করোনা শনাক্ত হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন আসে। তাই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে তাঁকে দাফন করা যায়নি।

এ ঘটনা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদরের। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি একজন ব্যবসায়ী (৫০)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ভাঙ্গা উপজেলা সদর বাজারে দোকান রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা। ভাঙ্গার চুমুরদী ইউনিয়নের অধিবাসী তিনি।

ব্যবসায়ীর পরিবার ও অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি সাম্প্রতিককালে ঢাকায় যাননি। তবে ভাঙ্গা সদর বাজারের আশপাশে বিভিন্ন দোকানের কয়েকজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ব্যবসায়িক সূত্রে তাঁদের সংস্পর্শে আসার কারণে তিনি আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা গণেশ কুমার আগরওয়ালা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার্ড হয়ে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ফুসফুসে ক্যানসারজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন ওই ব্যবসায়ী। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মারা যান তিনি।

গণেশ আগরওয়ালা আর বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে মৃত্যুবরণকারী ভাঙ্গার ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি বলেন, করোনা পরীক্ষার জন্য ওই ব্যক্তি যে নমুনা দিয়ে এসেছেন, এ তথ্যটি তিনি গোপন করে যান। ফলে তাঁর শ্বাসকষ্ট থাকলেও তা চিকিৎসকেরা ক্যানসার-আক্রান্ত রোগীর স্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা মো. মোহসীন উদ্দিন ফকির বলেন, ওই ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে আসেন। করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীর মৃত্যু ও দাফনের পর তাঁর করোনা শনাক্ত হয়েছে মর্মে আমরা প্রতিবেদন পাই। এ জন্য তাঁকে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে দাফন করা যায়নি।’

ভাঙ্গার এই ব্যবসায়ীকে নিয়ে এ পর্যন্ত ফরিদপুর জেলায় কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হলো। এর আগে বোয়ালমারীতে এক মুক্তিযোদ্ধাসহ দুজন, ভাঙ্গায় এক মুক্তিযোদ্ধা এবং আলফাডাঙ্গায় আনুমানিক ৩৮ বছর বছরের নাম-পরিচয়হীন এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।